বিনোদন ডেস্ক: মাত্র ছয় বছরের ক্যারিয়ার। এরইমধ্যে নির্মাতাদের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছেন তিনি।
কি ছোট পর্দা কিংবা ওয়েব মাধ্যম- তরুণ এ অভিনেত্রীর পারফরম্যান্সে মুগ্ধ দর্শক, সমালোচক। বলছি অভিনেত্রী ও মডেল তাসনিয়া ফারিণের কথা।
চলতি বছরের শুরুতে নতুন কিছু কাজ দিয়ে রয়েছেন আলোচনার কেন্দ্রে। সব মিলিয়ে - সময়টা এখন ফারিণের। কাজল আরেফিন অমি পরিচালিত ওয়েব ছবি 'অসময়'তে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। সম্প্রতি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বঙ্গ বিডিতে মুক্তি পাওয়া ছবিটি দিয়ে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন।
এতে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে 'উর্বি' হয়ে 'পর্দায় হাজির হয়েছেন তিনি। 'অসময়'-এর মূল কাহিনি বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া ছাত্রী উর্বিকে ঘিরে। যেখানে সে ঘটনাচক্রে একটি খুনের মামলায় ফেঁসে যায়। সন্দেহ করা হয়, নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের এ মেয়ে একটি অপরাধ চক্রের সঙ্গে জড়িত। উর্বির বিরুদ্ধে করা অভিযোগের প্রভাব তার পরিবারের সদস্যদের ওপর পড়ে। উর্বির মামলা ও তার পরিবারের সদস্যদের জীবনের গল্প অসময়ে নির্মাতা তুলে এনেছেন দারুণভাবে।
অসময়ের 'উর্বি' চরিত্রটি কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল ফারিণ বলেন, 'দেখুন, প্রতিটি চরিত্রেই বিভি- -ন্ন রকমের চ্যালেঞ্জ থাকে। উর্বিও এর বাইরে নয়। অসময়ের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল চরিত্রের ট্রান্সফরমেশন। একক নাটক, চলচ্চিত্র, ওয়েব ছবি, সিরিজ থেকে শুরু করে টিভিসি-ওভিসি সব মাধ্যমেই সরব তাসনিয়া ফারিণ। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে কলকাতায়ও যাচ্ছে।
প্রথমে দেখা যায়, হাজারো স্বপ্ন নিয়ে উর্বি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। বাবা-মা নিয়েই সে থাকে। গল্পে দেখা যায়, একটা দুর্ঘটনা ঘটে। এরপর তার জীবনে আসে: ব্যাপক পরিবর্তন। শারীরিক ও মানসিকভাবে ওই পরিবর্তন চরিত্রে ফুটিয়ে তোলা কঠিনই ছিল। ফারিণ আরও বলেন, সিনেমাটিতে যেমন সমাপ্তিটা দেখেছি আমরা, কখনও কখনও তার চেয়ে বিপরীত সমাপ্তিও হয়। হঠাৎ বি একটা পরিবার ধ্বংস হয়ে যায়। সমাজে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এ বার্তা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
আমি গল্পটির সঙ্গে একাত্ম মি হতে পেরেছি।' চলতি বছরটা ভালোই যাচ্ছে ফারিণের। একের পর এক সুসংবাদ পাচ্ছেন নানা দিক থেকে। ইরানের ফজর চলচ্চিত্র উৎসবের ইস্টার্ন ভিসতা কম্পিটিশন বিভাগে প্রতিযোগিতা করবে তাঁর অভিনীত চলচ্চিত্র 'ফাতিমা'। এটি পরিচালনা করেছেন ধ্রুব হাসান।
এ বিষয়ে তাসনিয়া ফারিণ বলেন, ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে এ কাজটি ওয়েব ফিল্ম হিসেবে রিলিজ দেওয়া। 'ফাতিমা' ইরানের ফজর উৎসবে যাচ্ছে। সত্যিই এটি ভীষণ ভালো লাগার। এর আগে ওয়েস্ট বেঙ্গল ফিল্ম জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (ডব্লিউবিএফজেএ) আয়োজিত 'সিনেমার সমাবর্তন ২০২৪'-এর পুরস্কার আসরে জয়া আহসানের সঙ্গে মনোনয়ন পেয়েছিলেন ফারিণ।
গত বছরই কলকাতার বাংলা সিনেমায় অভিষেক ঘটেছে ফারিণের। অতনু ঘোষের 'আরও এক পৃথিবী' সিনেমায় অভিনয়ের জন্য সেরা উদীয়মান নারী অভিনয়শিল্পী বিভাগে মনোনয়ন পেয়ে অন্য রকম আলোচনায় ছিলেন তিনি।
নাটক, বিজ্ঞাপন, ওয়েব ফিল্ম এবং কলকাতার সিনেমায় অভিনয় করলেও দেশের সিনেমায় দেখা যায়নি ফারিণকে। দেশের সিনেমায় কবে দেখা যাবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে এ অভিনেত্রীর ভাষ্য, 'ভালো গল্পে কাজ করতে সব সময় মুখিয়ে থাকি। বাংলাদেশের আলো ছড়িয়েছেন। গড়পড়তা গল্প-চরিত্রের চেয়ে অভিনয়ের পরিসর আছে- এমন গল্প খোঁজেন তিনি।
চরিত্রের গভীরে ডুব দিয়ে কীভাবে আসল অবয়ব তুলে আনতে হয়, গত কয়েক বছরে এর অনেক উদাহরণ তুলে ধরেছেন এ অভিনেত্রী। সুহাসিনী ফারিণের এ চেষ্টাই তাঁকে প্রতিনিয়ত নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে।