আরিফ হোসেন গোদাগাড়ী: কোরবানি ঈদের শেষ মুহূর্তে কর্মযজ্ঞে ব্যস্ত গোদাগাড়ীর কামারপট্টির কারিগররা। আর মাত্র কয়েকদিন পরেই ঈদুল আজহা। খুব একটা সময় নেই হাতে। এ অবস্থায় বিশাল কর্মযজ্ঞে মেতে ওঠেছে কামারপট্টির কারিগররা। টুং টাং শব্দে একেক জনের হাত যেন চলছে যন্ত্রের গতিতে! লক্ষ্য, মানুষের হাতে প্রয়োজনীয় পশু কাটার সরঞ্জামাদি তুলে দেয়া।
কোরবানির ঈদ মানেই নিজের কেনা পশুকে আল্লাহর নামে উৎসর্গ করা। এজন্য ঈদের আগে সবাই সামর্থ্যের মধ্যে পশু কেনা শেষ করেন। এরপরই ছোটেন কামারপট্টিতে; পশু কাটার সরঞ্জাম দা, ছুরি আর চাপাতির খোঁজে।
পশু জবাইয়ের ছুরি-চাকুসহ অন্যান্য সরঞ্জাম কিনতে ভিড় বেড়ে গেছে গোদাগাড়ী উপজেলার বিভিন্ন কামারপট্টিতে। দেখা যায়, ঈদকে সামনে রেখে বেড়ে গেছে এসবের চাহিদা। এ সুযোগে তাদের কাজের দামও বেড়ে গেছে দ্বিগুণ। অন্যান্য সময়ের তুলনায় দা, ছুরিতে শান দিতে গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণ টাকা।
কারিগররা কয়লার আগুনে পোড়ানো লোহাকে হাতুড়ির আঘাতে আঘাতে রূপ দিচ্ছেন ছুরি, চাকু, চাপাতি, দা-বটিসহ হরেক রকমের সরঞ্জামে।
কামার পাড়ায় এখন কারিগরদের যেন দম ফেলারও সময় নেই। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে কাজ। সারা বছর তেমন কাজ না থাকলেও কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কয়েকগুণ ব্যস্ততা বেড়ে যায় তাদের।
উপজেলার সিএন্ডবি মোড়, রেলবাজার, রেলগেট, কাঁকনহাট,বালিয়াঘাটা,প্রেমতলী,রাজবাবী,কামারপাড়াসহ অভ্যন্তরীন বেশ কয়েকটি বাজারে গিয়ে কামার শিল্পীদের এ ব্যস্ততা দেখা যায়।
পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে বেশ আগে থেকেই ব্যস্ততা বেড়েছে বলে জানান, সিএন্ডবি বাজারের শ্রী রঞ্জিত কর্মকার । তিনি জানান,
রাত-দিন সমান তালে কাজ করতে হচ্ছে। কোরবানির সময় শ্রমিক কর্মচারীদের মজুরি বাড়িয়ে দিতে হয়। তাই অন্যান্য সময়ের চেয়ে কোরবানিতে দা, ছুরিতে সামান্য টাকা বাড়িয়ে নিতে হয় তাদের।
তবে বর্তমানে লোহার দাম বৃদ্ধি থাকায় অনেকেই নতুন দা, ছুরি কেনার পরিবর্তে পুরনো দা, ছুরিতে শান দিতেই জোর দিচ্ছেন। পুরনো দা, ছুরিতে শান দেওয়ার চেয়ে তাদের বানানো নতুন দা, ছুরিতে লাভ বেশি হয়।
এদিকে জামিরুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা বলেন, ঈদ উপলক্ষে দা, চাপাতি ও ছুরির দাম আগের তুলনায় একটু বেশি নেওয়া হচ্ছে। দা শান দেওয়ার জন্য ১০০ টাকা থেকে শুরু করে কাজের গুনাগুনের ওপর ভিত্তি করে ১৫০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে।