1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. খেলাধুলা
  5. বিনোদন
  6. তথ্যপ্রযুক্তি
  7. সারাদেশ
  8. ক্যাম্পাস
  9. গণমাধ্যম
  10. ভিডিও গ্যালারী
  11. ফটোগ্যালারী
  12. আমাদের পরিবার
ঢাকা , শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫ , ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হত্যার পর লাশের ওপর দাঁড়িয়ে প্রকাশ্য নৃশংসতা, আসামি শনাক্ত

নিউজ ডেস্ক:
আপলোড সময় : ১১-০৭-২০২৫ ০৯:৪৫:৫৯ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১১-০৭-২০২৫ ০৯:৪৫:৫৯ অপরাহ্ন
হত্যার পর লাশের ওপর দাঁড়িয়ে প্রকাশ্য নৃশংসতা, আসামি শনাক্ত

পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালে কম্পাউন্ডে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যবসায়ী চাঁদ মিয়া ওরফে সোহাগ। সেখানে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় তাকে। এরপর নিথর দেহ টেনেহিঁচড়ে কম্পাউন্ডের বাইরের সড়কে এনে শত শত মানুষের সামনে চলে উন্মত্ততা। ঘটনাস্থলের একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
 
পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মহিন ও তারেক নামে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মহিন ঘটনার মূলহোতা। এছাড়া সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে সবাইকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান।
 
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকেলে ডিএমপির কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইয়াসিন শিকদার বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত মহিন ও তারেক নামের দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান।
 
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘটনার সময় অদূরেই চলছিল হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা, নিরাপত্তায় ছিলেন আনসার ক্যাম্পের সদস্যরাও। তবে এমন সন্ত্রাস আতঙ্কে কেউ এগিয়ে আসেনি। যখন তাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়, তখন চিকিৎসক জানান, আগেই মারা গেছেন সোহাগ।
 
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শুধু হত্যা করেই থেমে থাকেনি সন্ত্রাসীরা। সোহাগের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পরও লাশের ওপর চলতে থাকে নৃশংসতা। রক্তাক্ত নিথর দেহটি রাস্তার মাঝখানে ফেলে লাশের ওপর দাঁড়িয়ে চলে ভয়াবহ উন্মত্ত উল্লাস। একজন নয়, একাধিক যুবক মৃত ব্যক্তির নাক-মুখে এবং বুকের ওপর আঘাত করে যেতে থাকে।
 
ভিডিওতে দেখা যায়, নিথর দেহ টেনেহিঁচড়ে নিয়ে আসা লোকদের মধ্যে একজন মোবাইলে কথা বলছিল। ওই সময় দুই হাত-পা ছড়িয়ে পড়ে থাকা সোহাগের রক্তাক্ত মুখের ওপর কিলঘুষি দিতে থাকে আরেকজন। অন্য এক তরুণ দৌড়ে এসে পড়ে থাকা নিথর দেহের বুকের ওপর লাফাচ্ছিল! মানুষজনও দেখছিল এমন ভয়ংকর দৃশ্য।
 
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র বলছে, নিহত সোহাগ মিটফোর্ড এলাকায় ভাঙারি ব্যবসার সঙ্গে পুরোনো বৈদ্যুতিক কেবল কেনাবেচার ব্যবসা করতেন। তার দোকানের নাম সোহানা মেটাল। ওই এলাকায় বিদ্যুতের তামার তার ও সাদা তারের ব্যবসার একটা সিন্ডিকেট রয়েছে। এর নিয়ন্ত্রণ ছিল সোহাগের কাছে। তবে নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া ছিল মাহমুদুল হাসান মহিন ও সারোয়ার হোসেন টিটু নামে আরও দুজন। তারা অনেকটা ওই অবৈধ বাণিজ্যের ৫০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ চেয়েছিল। তা না হলে নিয়মিত চাঁদা দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল তারা। এর জেরেই দ্বন্দ্ব শুরু হয়। সেই দ্বন্দ্বে ঘটে নৃশংস হত্যাকাণ্ড। ঘটনার দিন সোহাগকে তার দোকান থেকে ডেকে আনা হয়েছিল।
 
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নিহত সোহাগ ও হামলায় নেতৃত্ব দেওয়া মহিন, টিটুসহ জড়িত অন্যরাও ৩০ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তবে সংগঠনে তাদের কোনো পদ রয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
 
নিহতের ভাগ্নি মীম আক্তার জানান, তার মামার পরিচিত লোকজনই এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তার মামা স্থানীয় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং মিটফোর্ড এলাকায় ব্যবসা করতেন। কিন্তু টিটু, মহিনসহ স্থানীয় আরও কয়েকজন এই ব্যবসায় ভাগ বসাতে চাচ্ছিল। ওই প্রতিপক্ষের লোকজনও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
 
তিনি জানান, খুনিরা সোহাগের কাছে ব্যবসার ৫০ শতাংশ অংশীদার দাবি করেছিল। নইলে লাভের ৫০ শতাংশ চাঁদা দেওয়ার জন্য হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল।
 
নিহতের অন্য এক স্বজন জানান, বুধবার দুপুরে টিটু সোহাগের বাসায় খাওয়া-দাওয়া করে। ভাত খাওয়ার সময় টিটু সোহাগকে বলে সব মিটমাট করে ফেলবে। কোনো ঝামেলা ছাড়াই যেন ব্যবসা করা যায়, সেজন্য সবার সঙ্গে বসে একবার কথা বললেই হবে। এই কথা বলে টিটু সোহাগকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরপর সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষা করা ৪০ থেকে ৫০ জন সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
 
এ ঘটনায় নিহতের বোন মঞ্জুয়ারা বেগম বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন। মামলায় মাহমুদুল হাসান মহিন, সারোয়ার হোসেন টিটু, মনির ওরফে ছোট মনির, আলমগীর, মনির ওরফে লম্বা মনির, নান্নু, সজীব, রিয়াদ, টিটন গাজী, রাকিব, সাবা করিম লাকী, কালু ওরফে স্বেচ্ছাসেবক কালু, রজব আলী পিন্টু, মো. সিরাজুল ইসলাম, রবিন, মিজান, অপু দাস, হিম্মত আলী ও আনিসুর রহমান হাওলাদারসহ অজ্ঞাতপরিচয় ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়।
 
ঢাকা মহানগর পুলিশের লালবাগ বিভাগের কোতোয়ালি জোনের এডিসি আমিনুল কবির তরফদার বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক এবং ভয়াবহ। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। সব আসামিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করা হবে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Daily Sonali Rajshahi

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ