পাঠ্যপুস্তক উৎসবের বাকি আর মাত্র দুদিন। এখনো চারটি শ্রেণির বই ছাপার কাজই শেষ হয়নি। তাই বছরের প্রথম দিন পুরো সেট বই পাবে না শিক্ষার্থীরা। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড ৮০ শতাংশ বই দিয়ে উৎসব পালনের কথা বললেও বই প্রকাশকরা বলছেন, পহেলা জানুয়ারি সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পৌঁছানো সম্ভব। আর কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ছাপনো বইয়ে নিম্নমানের কাগজ ব্যবহারের অভিযোগ এনেছেন মুদ্রণকারীরাই। তবে কাগজ সংকটের অজুহাত তুলে নিম্নমানের কাগজ দিয়ে বই মুদ্রণকারীদের পক্ষে সাফাই গেয়েছে এনসিটিবি।
বছরের প্রথম দিন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের হাতে কোটি কোটি নতুন বই তুলে দিয়ে বিশ্বে অনন্য নজির স্থাপন করেছে বাংলাদেশ। এবারো পহেলা জানুয়ারির আগেই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থীর জন্য মোট ৩৩ কোটি ৯৬ লাখ ৯ হাজার নতুন বই ছাপানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল সরকার। তবে বই ছাপানোর কার্যাদেশ দিতে দেরি করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড। পাশাপাশি কাগজ ও বিদ্যুৎ সংকটের কারণে বই উৎসবের মাত্র দুদিন বাকি এখনো ছাপার কাজই শেষ হয়নি।
কার্যাদেশ দিতে দেরির বিষয়টি স্বীকার করে এনসিটিবি বলছে, কাগজ সংকট ও বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে ভোগান্তিতে তারা। তবে পহেলা জানুয়ারি ৮০ শতাংশ বই দিয়ে উৎসব পালনে আশাবাদী প্রতিষ্ঠানটি।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান ফরহাদুল ইসলাম বলেন, আমরা যথাযথ ও আড়ম্বরভাবে আগামী পহেলা জানুয়ারি পাঠ্যপুস্তক উৎসব একযোগে করতে পারব।
তবে মুদ্রণসংশ্লিষ্টরা বলছেন ভিন্ন কথা। প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বই ছাপানোর জন্য এনসিটিবির কার্যাদেশের মেয়াদই ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। তাহলে পহেলা জানুয়ারি কীভাবে বই পৌঁছানোর কথা বলছে এনসিটিবি – এমন প্রশ্ন মুদ্রণসংশ্লিষ্টদের। সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ বই পৌঁছানোর চেষ্টায় তারা।
বাংলাদেশ পাঠ্যপুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি তোফায়েল খান বলেন, আমাদের ১৯ জানুয়ারির মধ্যে বই পৌঁছানোর তারিখ দেয়া হয়েছে। আমরা অষ্টম, নবম ও তৃতীয় শ্রেণির ৮০ শতাংশ বই দিতে পারব। প্রথম ও দ্বিতীয় এবং ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ৫০ শতাংশ দিতে পারব।
তবে ছাপা হওয়া বই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পৌঁছলেও কাগজের মান নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলছেন খোদ মুদ্রণকারীরাই। নানা কারণে কাগজের মানে এনসিটিবি ছাড় দিয়ে যে ক্রাইটেরিয়া নির্ধারণ করেছিল তাও মানেনি কিছু মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান।
তবে এনিসিটিবি বলছে, পরিস্থিতির কারণে মানে ছাড় দিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। তবে মান নিয়ন্ত্রণে দুই দফা তদারকির কথা বলেছন চেয়ারম্যান।
অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম বলেন, যথাসময়ে শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দেয়ার জন্য মানের দিক থেকে কিছুটা ছাড় দেয়া হচ্ছে।
শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন পর্যায়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দেবেন। পহেলা জানুয়ারি হবে চলতি বছরের পাঠ্যপুস্তক উৎসব