সোনালী রাজশাহী নিউজ: পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রতারনার অভিযোগে রাজশাহী জেলা গোয়েন্দা শাখা ( ডিবি) কর্তৃক ৩ জন আটক
রাজশাহী জেলা গোয়েন্দা শাখার অভিযানে চলমান ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগে প্রতারণার অভিযোগে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তিনজন প্রতারককে আটক করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে টিআরসি নিয়োগে প্রতারণার উদ্দেশ্যে নেওয়া ৩২ টি ফাঁকা এবং প্রায় ৫৬ কোটি টাকার এমাউন্ট বসানো স্বাক্ষর করা ১০টি চেক উদ্ধার করা হয়েছে। এর পাশাপাশি বিপুল পরিমান স্বাক্ষর করা ফাঁকা স্ট্যাম্পও উদ্ধার করা হয়েছে।
চলমান ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগে একটি চক্র বিপুল অংকের টাকা লেনদেনের মাধ্যমে চাকরি পাইয়ে দেয়ার কথা বলছে মর্মে এরুপ তথ্য জনৈক প্রার্থীর অভিভাবকের মাধ্যমে রাজশাহীর সম্মানিত পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বিপিএম বার মহোদয় অবগত হলে তিনি প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেয়ে জেলা গোয়েন্দা শাখার ইন্সপেক্টর রুহুল আমিনকে অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন।
পুলিশ সুপার মহোদয়ের দিকনির্দেশনায় ইন্সপেক্টর রুহুল আমিন ঢাকা শহরের সেগুনবাগিচা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮ টার দিকে মোঃ মারুফ হোসেন (৩৬), পিতা – মোঃ সামসুল, সাং দাসপুকুর, থানা – রাজপাড়া, রাজশাহীকে গ্রেফতার পূর্বক তার মেস থেকে দুটি চেক এবং একটি স্ট্যাম্প উদ্ধার করেন। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে মারুফ পুলিশে নিয়োগ পাইয়ে দেবার কথা বলে প্রার্থীদের অভিভাবকদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে এবং ঢাকার যাত্রাবাড়ি এলাকায় অবস্থানকারী জড়িত আরেক প্রতারকের নাম বলে। ডিবি টিম ঢাকার যাত্রাবাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে একই দিন সকাল এগারোটার দিকে মোঃ শাহাদত হোসেন (৩৩), পিতা -মোঃ শমসের আলী, সাং মঙ্গল হাটা, থানা ও জেলা বরিশালকে তার যাত্রাবাড়ীর ভাড়া বাসা হতে গ্রেফতার করে এবং তার হেফাজত হতে ২০টি স্ট্যাম্প , ২০টি চেক এবং একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়। শাহাদত হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদে সে পুলিশ নিয়োগে প্রতারণার কথা স্বীকার করে এবং গাজিপুর জেলার কালিয়াকৈর এলাকার আরেক ব্যক্তির জড়িত থাকার কথা জানায় । একই টিম অভিযান চলমান রেখে আব্দুল আজিজ (৪২)পিতা- মোঃ আবুল হোসেন, সাং চাতৈনভিটিথানা –কালিয়াকৈর জেলা – গাজীপুর কে তার বাড়ি থেকে আটক করে।
আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তারা দেশের বিভিন্ন স্থানের পুলিশ কনস্টেবল পদে ভর্তিচ্ছুদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে এবং নিজেদের পুলিশ সদর দপ্তরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তার কাছের লোক পরিচয় দিয়ে টাকার বিনিময়ে চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। তাদের কাছ থেকে নগদ টাকার পাশাপাশি স্বাক্ষর করা করা ফাঁকা ব্যাংক চেক এবং স্বাক্ষর করা ফাঁকা নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প নিয়ে নেয়। চলমান নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এই চক্রটি অন্তত ত্রিশ জনের কাছ থেকে তিন থেকে সাড়ে তিনকোটি টাকা লেনদেনের কার্যক্রম শুরু করেছিল। এ ঘটনায় রাজশাহীর পুঠিয়া থানায় মামলা রুজু হয়েছে।
আটক ব্যক্তিদের বিজ্ঞাদালতে সোপর্দ করে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে । উল্লেখ্য এ বিষয়ে আজ ১৫/২/২৩ তারিখ বেলা ১২.৩০ টায় পুলিশ সুপার মহোদয় পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিং করেন। তিনি বলেন, রাজশাহী
জেলা পুলিশ একটি স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত প্রক্রিয়ায় পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ দানে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। পাশাপাশি নিয়োগ প্রক্রিয়ার যেকোন পর্যায়ে যেকোন ধরনের আর্থিক লেনদেন ও প্রতারকচক্র থেকে বিরত থাকার জন্য সম্মানিত রাজশাহীবাসীকে আহবান জানান।