দুর্ভাগ্য ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরদের তাণ্ডব-অগ্নিসন্ত্রাসের ফলে প্রায় সাড়ে তিন হাজারের মতো মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়েছিল। ৫০০ মানুষ মৃত্যুবরণ করে অগ্নিসন্ত্রাসের কারণে, যেখানে ২৯ পুলিশ সদস্য নিহত হন। অনেক পুলিশ সদস্য আগুনে দগ্ধ হয়ে বেঁচে আছেন; কিন্তু কারও চেহারা এত বিকৃত হয়েছে যে, তারা মানুষের সামনে যেতে পারেন না। এ অনুষ্ঠানে তাদের স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।তিনি বলেন, পুলিশ সবসময় মানুষের পাশে আছে। যে কোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় পুলিশ পাশে থাকে। পাশাপাশি মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগেও পুলিশ ভূমিকা রাখে। মানুষের জানমাল বাঁচানোর জন্য নিজের জীবনকেও উৎসর্গ করে। যে কোনো ঝুঁকি নিতে পিছপা হয় না। এটাই হচ্ছে পুলিশের বড় কাজ, যা পুলিশ দক্ষতার সঙ্গে করে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার পর পুলিশকে আধুনিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলেন বঙ্গবন্ধু। আর তাই বর্তমান সরকারও এ বাহিনীর আধুনিকায়নে কাজ করে চলেছে।
সরকারের দায়িত্ব পালনে তিন মেয়াদে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করার পাশাপাশি পুলিশের আধুনিকায়নেও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পুলিশকে আরও গতিশীল করতে একে ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে রূপ দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
শেখ হাসিনা বলেন, জঙ্গিবাদের হাত থেকে আমরা দেশকে রক্ষা করেছি। জঙ্গি, সন্ত্রাস ও মাদক প্রতিরোধেও পুলিশ ভূমিকা রাখছে। জনগণের পুলিশ হিসেবেই জনগণের সেবা দিচ্ছে পুলিশ। পুলিশের ওপর জনগণের যে আস্থা তৈরি হয়েছে, সেটা ধরে রাখতে হবে। এ সময় হোলি আর্টিজানে হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তার নিহতের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, অনেক চক্রান্ত হয়েছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ কখনও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারে না। কোনো প্রতিবন্ধকতা যেন অগ্রযাত্রায় বাধা না হয়ে দাঁড়ায়, মন্দার ধাক্কা যেন না আসে, সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।
এবারের পুলিশ সপ্তাহের মূল প্রতিপাদ্য: ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ, পুলিশ আছে জনতার পাশে’। মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া পুলিশ সপ্তাহের নানা কর্মসূচি চলবে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত।
প্রধানমন্ত্রী একটি খোলা জিপে চড়ে বাংলাদেশ পুলিশের কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। পুলিশের বিভিন্ন দল বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ প্রদর্শন করে। পরে তিনি ১১৫ পুলিশ কর্মকর্তাকে বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) সাহসিকতা, রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) সাহসিকতা, বিপিএম সেবা এবং পিপিএম সেবা প্রদান করেন।
এদের মধ্যে ১৫ জন বিপিএম সাহসিকতা এবং ২৫ জন পিপিএম সাহসিকতা, ২৫ জন বিপিএম সেবা এবং ৫০ জন পিপিএম সেবা লাভ করেন।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন তাকে স্বাগত জানান।
এ সময় মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য ও ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়।