সোনালী রাজশাহী ডেস্ক : বেশির ভাগ কোমর ব্যথারই প্রকৃত কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। প্রয়োজনীয় ওষুধ আর ব্যায়ামের মাধ্যমে কোমর ব্যথায় আক্রান্ত রোগী সাধারণত তিন মাসের মধ্যেই সুস্থ হয়ে ওঠেন।
কিন্তু এর চেয়ে বেশি সময় ধরে যদি কোমর ব্যথায় ভোগেন, তাহলে তা অবশ্যই চিন্তার বিষয়। তা ছাড়া প্রায়ই যদি আপনি কোমর ব্যথায় ভোগেন, তবে তা-ও বিপদ সংকেতের শামিল।
অল্প বয়সে কোমর ব্যথা, যা জানালেন বিশেষজ্ঞরা
জীবনে কোমর ব্যথায় ভোগেননি, এমন মানুষ পাওয়া খুব কঠিন। এই অসুখে বেশি ভোগে বেশি বয়সীরাই। কিন্তু অল্প বয়সেও অনেককে এ রোগে আক্রান্ত হতে দেখা যায়, যা মোটেও ভালো কোনো ইঙ্গিত দেয় না বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ বিপদের মাত্রা আরও বেড়ে যায়, যখন এ অসুখের কবলে আপনি অল্প বয়সেই পড়ে যান।
অল্প বয়সে কোমর ব্যথায় আক্রান্ত হওয়ার সমস্যাকে চিকিৎসাশাস্ত্রে বলা হচ্ছে অ্যাংকাইলোজিং স্পনডাইলাইটিস।
এটি এমন রোগ যে আক্রান্ত হলে আপনি কম বয়সেই কোমর ব্যথার শিকার হবেন। গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন ও বাতরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রওশন আরা বলছেন, অ্যাংকাইলোজিং স্পনডাইলাইটিস রোগে সাধারণত ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সীরা বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন।
এদিকে পরিসংখ্যান বলছে, এই রোগে পুরুষ ও নারীর আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা ৩:১, যা থেকে বোঝা যায়, নারীর চেয়ে পুরুষের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা প্রায় দ্বিগুণ।
এই রোগে আক্রান্ত হলে মূলত রোগীর মেরুদণ্ড বেশি আক্রান্ত হয়ে পড়ে। কোমর ব্যথা এই রোগের প্রধান উপসর্গ। কোমরের সঙ্গে ব্যথা থাকে হাত-পায়ের গিরা, গোড়ালি, রগ অথবা রগ ও হাড়ের সংযোগস্থলও।
শরীরের এমন ব্যথা সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর বেশি তীব্র থাকে। এরপর রোগী ধীরে ধীরে দিনের প্রয়োজনীয় কাজকর্মের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করার পর এ ব্যথা কমতে থাকে।
ব্যথার তীব্রতা অনেক সময় এতই বেশি হয় যে রাতে রোগীর ঘুম প্রায়ই ভেঙে যেতে পারে। রোগী ব্যথার স্থানে জড়তা অনুভব করে, সহজে ব্যথাযুক্ত স্থান নাড়াতে পারে না।
পারিবারিক কারণেও এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এক্স-রে বা এমআরআই টেস্টের মাধ্যমে এই রোগ নির্ণয় করা যায়।
ব্যায়াম, ব্যথানাশক এবং বাতের সুনির্দিষ্ট কিছু ওষুধ এ রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। সঠিক চিকিৎসা সঠিক সময়ে না করা হলে ব্যথা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা শতভাগ।
ধীরে ধীরে মেরুদণ্ড শক্ত বা আড়ষ্ট হওয়ার পাশাপাশি হিপ জয়েন্ট অকার্যকর হতে পারে। তাই অল্প বয়সে কোমর ব্যথা তীব্র ও দীর্ঘমেয়াদি হলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।