সোনালী রাজশাহী ডেস্ক : আজ ১ মার্চ পুলিশ মেমোরিয়াল ডে। দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিধান, আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও জনগণের যানমাল রক্ষাকালে কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মত্যাগকারী পুলিশ সদস্যদের বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করে কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকা-সহ সকল রেঞ্জ, মেট্রোপলিটন ও জেলা পর্যায়ে দিবসটি পালন করছে।
সারা দেশের ন্যায় শ্র্র্রদ্ধা সম্মানে পুলিশ মেমোরিয়াল ডে পালন করেছে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ ও জেলা পুলিশ, রাজশাহী।
এ দিবস উপলক্ষ্যে (১ মার্চ, ২০২৩) রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ ও জেলা পুলিশ-সহ রাজশাহীস্থ অন্যান্য পুলিশ ইউনিট সকাল ১০ ঘটিকায় রাজশাহী পুলিশ লাইন্সের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। সেখানে নিহত পুলিশ সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনায় এক মিনিট নিরবতা পালন-সহ দোয়া করা পরবর্তীতে জেলা পুলিশ রাজশাহী’র ড্রিল শেডে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এছাড়াও অনুষ্ঠানে গত পাঁচ বছরে কর্তব্য পালনরত অবস্থায় ২০১৭ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মোট ৩৮ জন এবং ২০২২ সালের ৪ জন পুলিশ সদস্যদের পরিবারকে নগদ অর্থ, ক্রেস্ট ও সম্মাননা স্বীকৃতি স্মারক দেওয়া হয়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মো: আব্দুল বাতেন বিপিএম,পিপিএম ডিআইজি, রাজশাহী রেঞ্জ এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার মো: আনিসুর রহমান বিপিএম (বার),পিপিএম (বার)। অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন এ বি এম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার), পুলিশ সুপার, রাজশাহী জেলা।
অনুষ্ঠানে পুলিশ কমিশনার তাঁর বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সকল শহিদ সদস্য, শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা-সহ রাষ্ট্রের জন্য জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, জনগণের নিরাপত্তা বিধান ও দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য নিবেদিত প্রাণ। যেকোনো দায়িত্ব ও জাতীয় দূর্যোগে এ বাহিনীর সদস্যগণ চরম ধৈর্য, নিষ্ঠা ও দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিঃস্বার্থে তাদের জীবন বিলিয়ে দিচ্ছে। যুগেযুগে তাঁদের আত্মত্যাগের এই মহান দৃষ্টান্ত পুলিশ বাহিনীকে করেছেন গৌরাবান্বিত। তাঁদের কাছে আমরা চির ঋণী।
এসময় পুলিশ কমিশনার নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারের যে কোন প্রয়োজনে পাশে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিধান, আইনশৃঙ্খলা ও জনগণের জানমাল রক্ষার মতো ঝুঁকিপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে থাকেন পুলিশ সদস্যরা। দেশের যেকোনো প্রয়োজন ও সংকটে নিজের জীবন উৎসর্গ করতেও কুণ্ঠাবোধ করেন না তাঁরা। কর্তব্য পালনকালে প্রতিবছর অনেক পুলিশ সদস্য আহত ও নিহত হন। তাঁদের আত্মত্যাগের মহান দৃষ্টান্ত পুলিশ বাহিনীর জন্য গৌরব ও সম্মানের।
জাতীয় যেকোনো সংকটে সামনে থেকে দায়িত্ব পালন করছে বাংলাদেশ পুলিশ। মহামারি করোনাকালে নিজেদের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অসুস্থ করোনা রোগীদের হাসপাতালে নেওয়া, সেবাশুশ্রূষা করা, খাদ্য বিতরণ, ওষুধ পৌঁছে দেওয়া, অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস ইত্যাদি কাজও করেছেন পুলিশ সদস্যরা। অনেক ক্ষেত্রে করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তির স্বজনেরা দূরে সরে গেলে দাফনের কাজও করেছে পুলিশ।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বছরের একটি নির্দিষ্ট দিনে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত পুলিশ সদস্যদের কৃতিত্বপূর্ণ ও গৌরবোজ্জ্বল অবদানকে স্মরণ করা হয়। বাংলাদেশ পুলিশও ২০১৭ সালের ১ মার্চ থেকে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের স্মরণে ‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে’ পালন করে আসছে।