ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
গোদাগাড়ীতে ১৫০ গ্রাম হিরোইনসহ একজন গ্রেফতার বর্তমান সমাজে মারাত্মক এক ব্যাধির নাম ইভটিজিং বরিশাল ও খুলনা দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে  বিজয় নৌকার প্রার্থী খুলনা ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু রাজশাহী শ্রীরামপুরে পদ্মা নদীতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হওয়া দুই কলেজছাত্রের লাশ উদ্ধার অসহায় বৃদ্ধা আলেয়া পেলেন চোখ অপারেশনের টাকা তীব্র তাপপ্রবাহের পর গোদাগাড়ীতে দেখা মিললো সস্তির বৃষ্টি প্রখ্যাত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী বনানী ঘোষ মারা গেছেন দেড় কোটি টাকা মূল্যের ১৫টি স্বর্ণের বারসহ এক যুবক গ্রেপ্তার নির্বাচনে অনিয়ম ও প্রভাব সৃষ্টি করলে ভোট বন্ধ করতে বাধ্য হবে: সিইসি

রাজশাহী নগরীতে অক্সিজেনের পাইপ নাকে নিয়ে রিকশা চালান সেন্টু

সোনালী রাজশাহী : রাজশাহী নগরীতে অক্সিজেনের পাইপ নাকে নিয়ে রিকশা চালান সেন্টু। সাত বছর ধরে অক্সিজেনের সিলিন্ডার নিয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালান মাইনুরুজ্জামান সেন্টু। এখন তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক)।

৫৫ বছর বয়সী  সেন্টু রাজশাহী নগরীর ১০ নম্বর ওয়ার্ডের হেতমখাঁ কলাবাগান এলাকায়  স্ত্রীসহ ভাড়া বাড়িতে বসবাস করেন।
তিন সন্তানের বাবা তিনি। দুই মেয়ে ও এক ছেলে বিয়ের পর থেকে নিজেদের সংসার নিয়ে ব্যস্ত। ফলে, ফুসফুসের সমস্যা নিয়ে স্ত্রী ও নিজের যাবতীয় খরচ মেটানোর ব্যবস্থা করতে হয় নিজেকে। আর তাই চালাতে হয় রিকশা।

গত রোববার রাতে শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তাকে হাসপাতালে  সেন্ট্রাল অক্সিজেনের আওতায় রাখা হয়েছে। গত দেড় মাসে ব্যক্তিগত খরচে কেনা অক্সিজেন সংকটে পড়ে তিনবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে।

জানা যায় রাজশাহী  নগরীতে আগে সেন্টুর  খাবারের দোকান ছিল। ২০১৫ সালের দিকে তার শ্বাসকষ্টজনিত রোগ ধরা পড়ে। এরপর খাবার দোকান বন্ধ করে দেন তিনি। ২০১৬ সালে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ৮০ হাজার টাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা কেনেন। সেই রিকশা চালাতে শুরু করেন সেন্টু। শুরুতে সমস্যা না হলেও পরে শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে। বেড়ে যায় ওষুধের ব্যয়। ফলে, রিকশা চালানো ছাড়তে পারেন না তিনি। রোজগারের জন্য রিকশায় সিলিন্ডার লাগিয়ে সেখান থেকে নাকে অক্সিজেনের পাইপ টেনে পথে নামতে হয়।

, চিকিৎসার জন্য সেন্টুকে প্রতিদিন ব্যয় করতে হয় ৬০০ টাকা। তিনি যখন রিকশা চালান, তখন হ্যান্ডেলের সঙ্গে অক্সিজেন সিলিন্ডার বাঁধা থাকে। সেই সিলিন্ডার থেকে একটি নল চলে গেছে সেন্টুর নাকের কাছে। এভাবেই অক্সিজেন নিয়ে ২০১৬ সাল থেকে রিকশা চালিয়ে তিনি জীবিকা নির্বাহ করে যাচ্ছেন।

সেন্টুর স্ত্রী চম্পা বেগম জানান, তার স্বামীর আগে যক্ষা রোগ ছিল। চিকিৎসা করে সে রোগ সেরে গেলেও ফুসফুসের সমস্যা পুরোপুরি যায়নি। সাত বছর থেকে তার স্বামীর শ্বাসকষ্টের এই রোগ। তিন বছর ধরে বেড়েছে রোগের তীব্রতা। গত পাঁচ মাস ধরে প্রতিদিন তিনটি করে অক্সিজেন সিলিন্ডার লাগে তার।

চম্পা বেগম আরও জানান, প্রতিদিনের অক্সিজেন কিনতে খুব কষ্ট হয় তাদের। বর্তমানে তাদের দুটি অক্সিজেনের সিলিন্ডার আছে। যার মধ্যে একটি তার মামা শ্বশুর ও অন্যটি এলাকার মানুষজন কিনে দিয়েছে। এতে করে সিলিন্ডার কিনতে হয় না। কিন্তু, প্রতিদিনের অক্সিজেন কিনতে হয়।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখন  চিকিৎসাধীন রিকশাচালক মাইনুরুজ্জামান সেন্টু।
ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

গোদাগাড়ীতে ১৫০ গ্রাম হিরোইনসহ একজন গ্রেফতার

রাজশাহী নগরীতে অক্সিজেনের পাইপ নাকে নিয়ে রিকশা চালান সেন্টু

আপডেট সময় ০১:০০:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ মে ২০২৩

সোনালী রাজশাহী : রাজশাহী নগরীতে অক্সিজেনের পাইপ নাকে নিয়ে রিকশা চালান সেন্টু। সাত বছর ধরে অক্সিজেনের সিলিন্ডার নিয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালান মাইনুরুজ্জামান সেন্টু। এখন তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক)।

৫৫ বছর বয়সী  সেন্টু রাজশাহী নগরীর ১০ নম্বর ওয়ার্ডের হেতমখাঁ কলাবাগান এলাকায়  স্ত্রীসহ ভাড়া বাড়িতে বসবাস করেন।
তিন সন্তানের বাবা তিনি। দুই মেয়ে ও এক ছেলে বিয়ের পর থেকে নিজেদের সংসার নিয়ে ব্যস্ত। ফলে, ফুসফুসের সমস্যা নিয়ে স্ত্রী ও নিজের যাবতীয় খরচ মেটানোর ব্যবস্থা করতে হয় নিজেকে। আর তাই চালাতে হয় রিকশা।

গত রোববার রাতে শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তাকে হাসপাতালে  সেন্ট্রাল অক্সিজেনের আওতায় রাখা হয়েছে। গত দেড় মাসে ব্যক্তিগত খরচে কেনা অক্সিজেন সংকটে পড়ে তিনবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে।

জানা যায় রাজশাহী  নগরীতে আগে সেন্টুর  খাবারের দোকান ছিল। ২০১৫ সালের দিকে তার শ্বাসকষ্টজনিত রোগ ধরা পড়ে। এরপর খাবার দোকান বন্ধ করে দেন তিনি। ২০১৬ সালে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ৮০ হাজার টাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা কেনেন। সেই রিকশা চালাতে শুরু করেন সেন্টু। শুরুতে সমস্যা না হলেও পরে শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে। বেড়ে যায় ওষুধের ব্যয়। ফলে, রিকশা চালানো ছাড়তে পারেন না তিনি। রোজগারের জন্য রিকশায় সিলিন্ডার লাগিয়ে সেখান থেকে নাকে অক্সিজেনের পাইপ টেনে পথে নামতে হয়।

, চিকিৎসার জন্য সেন্টুকে প্রতিদিন ব্যয় করতে হয় ৬০০ টাকা। তিনি যখন রিকশা চালান, তখন হ্যান্ডেলের সঙ্গে অক্সিজেন সিলিন্ডার বাঁধা থাকে। সেই সিলিন্ডার থেকে একটি নল চলে গেছে সেন্টুর নাকের কাছে। এভাবেই অক্সিজেন নিয়ে ২০১৬ সাল থেকে রিকশা চালিয়ে তিনি জীবিকা নির্বাহ করে যাচ্ছেন।

সেন্টুর স্ত্রী চম্পা বেগম জানান, তার স্বামীর আগে যক্ষা রোগ ছিল। চিকিৎসা করে সে রোগ সেরে গেলেও ফুসফুসের সমস্যা পুরোপুরি যায়নি। সাত বছর থেকে তার স্বামীর শ্বাসকষ্টের এই রোগ। তিন বছর ধরে বেড়েছে রোগের তীব্রতা। গত পাঁচ মাস ধরে প্রতিদিন তিনটি করে অক্সিজেন সিলিন্ডার লাগে তার।

চম্পা বেগম আরও জানান, প্রতিদিনের অক্সিজেন কিনতে খুব কষ্ট হয় তাদের। বর্তমানে তাদের দুটি অক্সিজেনের সিলিন্ডার আছে। যার মধ্যে একটি তার মামা শ্বশুর ও অন্যটি এলাকার মানুষজন কিনে দিয়েছে। এতে করে সিলিন্ডার কিনতে হয় না। কিন্তু, প্রতিদিনের অক্সিজেন কিনতে হয়।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখন  চিকিৎসাধীন রিকশাচালক মাইনুরুজ্জামান সেন্টু।