সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফল জানতে নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসেন মানিক। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে জিপিএ-৫ পেয়ে খুশি তিনি। মানিকের সঙ্গে খুশি শিক্ষকরাও।
মেধাবী এ শিক্ষার্থী শারীরিক প্রতিবন্ধী মানিক রহমান কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামের ওষুধ ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ও রাবাইতারী স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক মরিয়ম বেগমের ছেলে।
সে এ বছর ফুলবাড়ী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়ে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছেন।♦ জেএসসিতেও গোল্ডেন জিপিএ-৫ পায় মানিক। তবে তিনি ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল।
জানা গেছে, মানিক রহমান জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। জন্ম থেকেই তার একটি পা অন্যটির চেয়ে অনেকাংশে খাটো। তাকে নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে মা-বাবা। তাদের চেষ্টায় পিছিয়ে যায়নি মানিক। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকলেও পিইসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ সহ ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছিল। শুধু পা দিয়ে লেখাই নয়, পা দিয়ে মোবাইল ফোনে কথা বলা, কম্পিউটার টাইপিং ও ইন্টারনেট ব্যবহারেও পারদর্শী মানিক রহমান ভবিষ্যতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে চান।
এ প্রসঙ্গে মানিকের মা মরিয়ম বেগম জানান, মানিকের জন্মগত দুই হাত নেই। দুই পায়ের মধ্যে বাম পা প্রায় ৬ ইঞ্চি খাটো ছিল। তাকে নিয়ে চিন্তায় দিশেহারা ছিলাম। অনেক কষ্ট করে স্কুলমুখী করা হয় মানিককে। প্রথম শ্রেণি থেকে মানিকের এক রোল।
মানিকের বাবা মিজানুর রহমান বলেন, ছোট বেলা থেকে লেখাপড়ার আগ্রহ ছিল তার। হামাগুঁড়ি দিয়ে কলম ধরতে ও টেলিভিশনের রিমোট ধরে কার্টুন দেখে মজা পেত। স্কুলের সময়ের আগে গোসল করতো। আর ক্লাসের আগে স্কুলে পৌঁছাতে হতো তাকে। প্রতিদিন একাই ঘরে রাত ১১টা পর্যন্ত লেখা পড়া করতো।
ফুলবাড়ী ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবেদ আলী খন্দকার জানান, শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ার পরেও মানিক রহমান অন্যান্য শিক্ষার্থীদের চেয়ে ভালো ফলাফল করায় আমরা মুগ্ধ। এবারেও বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ভালো ফলাফল করায় আমরা খুশি হয়েছি।