সোনালী রাজশাহী নিউজ: বরগুনা সদর উপজেলার পোটকাখালি গণকবরের পাশে ইট বালু আর সিমেন্ট দিয়ে নিজের কবরটি তৈরি করেছেন দুলাল ফকির।
পোটকাখালী গণকবরের পূর্ব পাশে সরকারের কাছ থেকে পাওয়া জমিতে কবরটি বানিয়েছেন দুলাল ফকির। চারদিক থেকে উঁচু দেয়াল দিয়ে ঘেরা জায়গার ভেতরে কবরটি বানানো হয়েছে। কবরের চারপাশ ইটের গাঁথুনি দিয়ে তৈরি করে ভেতরে মাটি ভরাট করা হয়েছে। কবরের ভেতরে লাগানো হয়েছে বেশ কয়েকটি ফুল গাছ। বেশ কিছুদিন ধরে কারও সাহায্য ছাড়া নিজেই করেছেন এ কবর।
নিজের জন্য কবর তৈরি করা ওই ব্যক্তির নাম দুলাল। ১০ সন্তানের জনক তিনি। স্থানীয়ভাবে তিনি দুলাল ফকির নামে পরিচিত।
দীর্ঘ চার দশক ধরে বরগুনা সদর হাসপাতালের মর্গে ডোমের দায়িত্ব পালন করার কারণে অনেকের কাছে তিনি ডোম দুলাল নামেও পরিচিত।
এ বিষয়ে দুলাল ফকির বলেন, ‘বাবা-মায়ের কবর বাঁধাই করার জন্য গ্রামের বাড়িতে আমি ইট পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেই ইট দিয়ে কবর বাঁধাই না করে অন্য কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। এতে বাবা মায়ের কবর ঝোপঝাড়ের আড়ালে অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে থাকে। এতে আমি ভীষণ কষ্ট পেয়েছিলাম। এরপর থেকেই নিকট আত্মীয়দের ওপর আমার বিশ্বাস নষ্ট যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার মৃত্যুর পরও আমার কবর অযত্ন অবহেলায় পড়ে থাকতে পারে। কেউ আমার কবর বাঁধাই নাও করতে পারে। এ কারণেই মৃত্যুর আগেই আমি নিজেই নিজের কবর বাঁধাই করে তৈরি করেছি।
এ বিষয়ে দুলাল ফকিরের ছেলে আলী হোসেন বলেন, নিজের জন্য কবর তৈরির কাজ থেকে বিরত থাকতে আমার বাবাকে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু তিনি কারও কথা শোনেননি।
স্থানীয় অধিবাসীরা জানান, মৃত্যুর আগে কারও জন্য কখনও কবর বানাতে দেখিনি। কিন্তু এখন দেখলাম, নিজের জন্য দুলাল ফকির নিজেই কবর তৈরি করেছেন।
এ বিষয়ে বরগুনার থানা জামে মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা আ. করিম বলেন, মৃত্যুর আগে কবরের জন্য স্থান নির্ধারণ করা এবং মাটি ভরাট করা যেতে পারে। কিন্তু মৃত্যুর আগে বা পরে কবর বাঁধাই করা ইসলাম সমর্থন করে না।
তিনি বলেন, এক জায়গায় অনেক কবর থাকলে সেই কবরগুলোর চারপাশ দিয়ে দেয়াল তুলে কবরগুলো যত্ন নেয়া যেতে পারে।