সোনালী রাজশাহী নিউজ: ঘোড়ায় এলেন বর, পালকিতে বউ, আর রাজশাহী-৪ আসনের এমপি উড়ে এলেন হেলিকপ্টারে!
বর এলেন ঘোড়ায় চড়ে, কনে পালকিতে। আর সেই বিয়েতে স্থানীয় সংসদ সদস্য এনামুল হক এসেছেন হেলিকপ্টারে চড়ে। এমন ঘটনা ঘটেছে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার সোনাডাঙ্গা ইউনিয়নে।
°
দৈনিক সোনালী রাজশাহী এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News/ sonalirajshahi.com
°
জানা গেছে, রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার মতিউর রহমান হালিমের দাদা ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে করতে গিয়েছিলেন। সেই গল্প শুনে বড় হয়েছেন নাতি হালিম। তাই নাতিরও শখ ছিল ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে করতে যাবেন। নববধূ আনবেন পালকিতে করে। আজ শনিবার মতিউর ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে করতে গিয়েছেন। আর কনে এনেছেন পালকিতে। ইচ্ছা পূরণে পাশে পেয়েছেন পরিবারকে।
বাগমারা উপজেলার সোনাডাঙ্গা ইউনিয়নের ভরট্ট গ্রামের মাদ্রাসাশিক্ষক আবদুল মান্নান ও স্বাস্থ্যকর্মী হালিমা খাতুনের ছেলে মতিউর রহমান হালিম। কনে ফারহানা আঁখির বাবা আজাহারুল হক সোনাডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। পারিবারিকভাবে এ বিয়ের আয়োজন করা হয়। বর মতিউর রহমান চীন থেকে পড়াশোনা শেষ করে এসেছেন। কনে ফারহানা রাজশাহী কলেজের পরিসংখ্যান বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্রী। আজ তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।
ইউপি চেয়ারম্যান ও কনের বাবা আজাহারুল হক জানান, বিয়ের সময় আমার মাও পালকিতে চড়ে শ্বশুর বাড়ি গিয়েছেন। আবার আমার জামাইয়ের দাদা বিয়ে করতে গিয়েছিলেন ঘোড়ায় চড়ে। তাই তার (হালিমের) শখ হয়েছে ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে করতে যাওয়ার। এটা পুরনো ঐতিহ্য। আবার আমার বাড়িতে দাওয়াত খেতে এমপি সাহেব এসেছেন হেলিকপ্টারে চড়ে।
বিয়ের প্রস্তুতি কয়েকদিন ধরেই চলছিলো। গ্রামের একজন প্রবীণ কাঠমিস্ত্রি তিন দিনে পালকি তৈরি করেন। বরকে কনের বাড়িতে নেওয়ার জন্য একটি ঘোড়া ভাড়া করা হয়। বাগমারা উপজেলার শেরকোল এলাকার এক ব্যক্তির কাছ থেকে এক দিনে জন্য ঘোড়াটি ভাড়া করা হয়। দুপুর ১২টার দিকে ভরট্ট গ্রাম থেকে ঘোড়ায় চড়ে মতিউর কনের বাড়িতে আসেন। সঙ্গে নেন পালকি।
এদিকে বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার উপস্থিত হন স্থানীয় সংষদ সদস্য এনামুল হক। দুপুর ১২টা ৩৮ মিনিটে হেলিকপ্টারটি স্থানীয় ফুটবল মাঠে অবতরণ করে।
সংসদ সদস্য এনামুল হক বলেন, ‘ঘোড়া-পালকিতে করে বিয়ে হবে আমি জানতাম না। রোববার বিদেশ যাব। কিন্তু বিয়েতে আসাটাও জরুরি। কনের বাবা আজহারুল হক আমার খুবই প্রিয় মানুষ। সময় বাঁচাতেই আমি হেলিকপ্টারে করে বিয়েতে যাই। গিয়ে ঘোড়া আর পালকিতে বিয়ের আয়োজন দেখে আমিও অবাক হই।’
মতিউরের মা হালিমা খাতুন বলেন, ছেলের ইচ্ছা ছিল দাদার মতো ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে করতে যাওয়ার। ছেলের শখ মেটাতে পরিবারের ঐতিহ্য ফিরে আনতে তাঁরা এ আয়োজন করেছেন। সবাইকে চমকে দিতে কিছুটা গোপনেই এসব আয়োজন করা হয়।