শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৯ থেকে ২০২৩ একটানা গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রয়েছে বলেই দেশের বর্তমান উন্নয়ন-অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে। অতীতের সরকারগুলোর দেশ নিয়ে কী ধারণা ছিল সেটি নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। অ্যাডহক (অনির্ধারিত) ভিত্তিতে নয়, পরিকল্পিতভাবে দেশকে এগিয়ে নেয়ার কাজ করছে আওয়ামী লীগ সরকার। আর তাই ক্ষমতাকে জনগণের সেবা করার সুযোগ হিসেবে দেখা হয়। দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় আছে বলেই গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রয়েছে; তাই দেশের উন্নয়ন হয়েছে।’
তিনি বলেন, রক্তস্নাত স্বাধীনতা কখনও বৃথা যেতে পারে না; যেতে দেয়া হবে না। স্বাধীনতা পুরস্কারের মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, যে আদর্শ ও যে চেতনা নিয়ে এ দেশ স্বাধীন হয়েছিল, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তা অনেক দূরে চলে গিয়েছিল। এমন একটা সময় এসেছিল যে, মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের মুক্তিযোদ্ধা বলতে ভয় পেতেন। তারা মুক্তিযোদ্ধা বললেই অবহেলার স্বীকার হতেন। সেটা সরকারি হোক বা বেসরকারি হোক সব ক্ষেত্রেই একই অবস্থা ছিল। সেখান থেকে তাদের উত্তরণে কাজ করেছে বর্তমান সরকার।
এর আগে, জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০২৩ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার পাওয়া ব্যক্তিদের হাতে পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বীর বিক্রম মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াসহ দেশের ৯ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠান ২০২৩ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার পান।
স্বাধীনতা পুরস্কার পেলেন যারা:
স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল (অব.) সামসুল আলম, মরহুম লে. এ জি মোহাম্মদ খুরশীদ, শহীদ খাজা নিজামউদ্দিন ভূঁইয়া ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী (মায়া) বীর বিক্রম, সাহিত্যে মরহুম ড. মুহাম্মদ মঈনুদ্দিন আহমেদ (সেলিম আল দীন); সংস্কৃতিতে পবিত্র মোহন দে; ক্রীড়ায় এএসএম রকিবুল হাসান; সমাজসেবা/জনসেবায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর; গবেষণা ও প্রশিক্ষণে বেগম নাদিরা জাহান (সুরমা জাহিদ) এবং ড. ফিরদৌসী কাদরী।
স্বাধীনতা পুরস্কার সরকারের দেয়া সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদক। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবসের আগেই এ পদক ঘোষণা করা হয়। এই পুরস্কার জাতীয় জীবনে সরকার নির্ধারিত বিভিন্ন ক্ষেত্রে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দেশের নাগরিক এমন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে দেয়া হয়ে থাকে।
এ ছাড়া ব্যক্তির পাশাপাশি জাতীয় জীবনের নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে অনন্য উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য প্রতিষ্ঠানকেও এ পুরস্কার দেয়া হয়ে থাকে।
স্বাধীনতা পুরস্কারের স্বর্ণপদক প্রত্যেক পদকপ্রাপ্তকে একটি ১৮ ক্যারেট স্বর্ণনির্মিত ৫০ গ্রাম ওজন বিশিষ্ট পদক, একটি সম্মাননাসূচক প্রত্যয়নপত্র এবং সম্মাননাসূচক নির্দিষ্ট অঙ্কের নগদ অর্থ দেয়া হয়। প্রাথমিকভাবে দেয়া অর্থের পরিমাণ ২০ হাজার ছিল। ২০১৩ সাল থেকে ২ লাখ টাকা করে দেয়া হতো। পরবর্তী ২০১৭ সালের মে মাসে ৩ লাখ এবং সবশেষ ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে ৫ লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়।
এর আগে গত ৯ মার্চ এক বিজ্ঞপ্তিতে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকা প্রকাশ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২৩’ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।