° স্বাধীনতা তুমি
পতাকা-শোভিত শ্লোগান-মুখর ঝাঁঝালো মিছিল।
পিতার কোমল জায়নামাজের উদার জমিন।
উঠানে ছড়ানো মায়ের শুভ্র শাড়ির কাঁপন।
বোনের হাতের নম্র পাতায় মেহেদীর রঙ °
আরিফ হোসেন : আজ ২৬ মার্চ দেশের ৫২তম মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বশক্তি দিয়ে হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ ও চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ডাক দিয়েছিলেন। এরপর ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। ঢাকাসহ সারাদেশে দিবসটির পালন হবে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
এরপর মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রীর নেতৃত্বে উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি কূটনীতিকবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।
বাংলাদেশসহ পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা বাংলাদেশিরা দিবসটি উদ্যাপন করবেন। বিশ্বব্যাপী চলা করোনা মহামারির কারণে
গত দুই বছর সীমিত পরিসরে এবং কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন করতে হয়েছে। এ বছর করোনা পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। তাই স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপনে এবার স্বতঃস্ফূর্ততা বেশি থাকবে
২৬ মার্চ, বাংলাদেশের লাখো শহীদের রক্তে রঞ্জিত জাতীয় দিবস। ২৬ র্মাচ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক রক্তাক্ত আনন্দের নাম। ২৬ মার্চ বিশ্বের বুকে লাল সবুজের পতাকা ওড়ানোর দিন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। বাঙালির স্বাধীকার আন্দোলন, ও অধিকারকে রক্তের বন্যায় ডুবিয়ে দিতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী শুরু করেছিল সারাদেশে গণহত্যা।
সেইরাতে হানাদাররা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল, ইকবাল হল, রোকেয়া হল, শিক্ষকদের বাসা, পিলখানার ইপিআর সদরদপ্তর, রাজারবাগ পুলিশ লাইনে একযোগে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে হত্যা করে অগণিত নিরস্ত্র দেশপ্রেমিক ও দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। ২৫ মার্চ রাতেই পুলিশ, ইপিআর ও সেনাবাহিনীর বাঙালি সদস্যরা শুরু করে প্রতিরোধ যুদ্ধ, সঙ্গে যোগ দেয় সাধারণ মানুষ। বছর ঘুরে আজ আবার ফিরে এসেছে সেই দিন- মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। বাঙালি জাতির গৌরবের দিন। আজকের সূর্যটা সেদিনের মতো বেদনাবিধুর নয়। নয় লজ্জায় আড়ষ্ট। বরং আজ ভোরের সূর্য যে আলোকের বর্ণচ্ছটা ছড়িয়েছে, তা রাঙিয়েছে কৃষ্ণচূড়া, পলাশ, শিমুল। আজ বাংলাদেশ বিশ্বমানচিত্রে বহু অর্জনের দৃষ্টান্ত, উন্নয়নের মহাবিস্ময়। মহান সেই স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবেসে অগনিত শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জানাই গভীর শ্রদ্ধা।