ঢাকা , রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
গোদাগাড়ীতে ১৫০ গ্রাম হিরোইনসহ একজন গ্রেফতার বর্তমান সমাজে মারাত্মক এক ব্যাধির নাম ইভটিজিং বরিশাল ও খুলনা দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে  বিজয় নৌকার প্রার্থী খুলনা ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু রাজশাহী শ্রীরামপুরে পদ্মা নদীতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হওয়া দুই কলেজছাত্রের লাশ উদ্ধার অসহায় বৃদ্ধা আলেয়া পেলেন চোখ অপারেশনের টাকা তীব্র তাপপ্রবাহের পর গোদাগাড়ীতে দেখা মিললো সস্তির বৃষ্টি প্রখ্যাত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী বনানী ঘোষ মারা গেছেন দেড় কোটি টাকা মূল্যের ১৫টি স্বর্ণের বারসহ এক যুবক গ্রেপ্তার নির্বাচনে অনিয়ম ও প্রভাব সৃষ্টি করলে ভোট বন্ধ করতে বাধ্য হবে: সিইসি

৫০ বছর পেরিয়ে শতাব্দীর অভিযাত্রায় বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি

 বামপন্থীদের মধ্যে ঐক্য গড়ার প্রত্যয়

 

নিউজ ডেস্ক :  বিভিন্ন লড়াই-সংগ্রাম, অর্জন ও ত্যাগের মধ্যে দিয়ে প্রতিষ্ঠার গৌরবোজ্জ্বল ৫০ বছর পূর্ণ করেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি সদা অবিচল দেশের বৃহত্তর বামপন্থী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে শতাব্দীর অভিযাত্রার প্রাক্কালে দেশের সব বামপন্থী-কমিউনিস্টদের মধ্যে ‘আদর্শগত’ ঐক্যের ডাক দিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা।
বুধবার (১৭ মে) সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিটিউশন মিলনায়তনে ওয়ার্কার্স পার্টির ৫০ বছর পূর্তিতে বছরব্যাপী কর্মসূচির সমাপনী সমাবেশ থেকে তারা এ ঐক্যের ডাক দেন। সারাদেশ থেকে আগত ওয়ার্কার্স পার্টিসহ বন্ধু সংগঠনের নেতাকর্মীরা এই সমাবেশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন। ‘নির্বাচন বিদেশিদের নির্দেশে হবে না’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, নির্বাচন এলেই দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র শুরু হয়। বিদেশি বন্ধুরা অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায়। তারা নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরাও অংশগ্রহণমূলক এবং অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। তবে নির্বাচন বানচালের কোনো ষড়যন্ত্র হলে তা আমরা প্রতিহত করব। নির্বাচন বিদেশিদের নির্দেশে হবে না, নির্বাচনকে উৎসব হিসেবে নেওয়া দেশের মানুষ নিজেরাই সুষ্ঠু নির্বাচন করবে।’

সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য দেন ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। তিনি বলেন, ‘ওয়ার্কার্স পার্টি সবসময় বাস্তবতা বিবেচনা করে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। আমরা যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে গেছিলাম, তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। দেশের সম্পদ মুষ্টিমেয় ধনিক শ্রেণির হাতে চলে যাচ্ছে। সমস্ত ক্ষমতা মুষ্টিমেয় ধনী ও আমলা গোষ্ঠীর হাতে কেন্দ্রীভূত। এসব মুক্তিযুদ্ধের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার ব্যর্থতা। জামায়াত-বিএনপির হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে আমরা ১৪ দলীয় জোট গঠন করেছিলাম। সে লক্ষ্য অর্জন হয়ে গেলেও জোটের প্রাসঙ্গিকতা এখনো বিদ্যমান। কারণ, এখনো নির্বাচনসহ অন্যান্য অনেক ইস্যুতে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে; যা আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ করতে হবে।’

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে রাকসুর সাবেক এই ভিপি ও অভিজ্ঞ পার্লামেন্টেরিয়ান বলেন, ‘আপনারা নিজ জেলায়-জেলায় ফিরে গিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করুন। দলকে আরও শক্তিশালী করতে আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। মনে রাখবেন, আমরা কখনোই মানুষের স্বার্থবিরোধী কোন কর্মকাণ্ড করিনি। সুতরাং, আগামীতে আমরাই মানুষের সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকবো। আমরা রাজনৈতিক ইস্যুতেই শুধুমাত্র লড়াই করি তা নয়, কৃষক-শ্রমিক নিয়ে, নদী নিয়ে, পানি নিয়ে, আদিবাসীদের নিয়েও আমরা লড়াই করি। তাই আসুন, আমরা সকলেই মেহনতি মানুষের পক্ষে ওয়ার্কার্স পার্টির চলমান রাজনৈতিক কর্মসূচি সফলে নিজেদের আত্মনিয়োগ করি।’

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন  ‘দেশের কোন বামপন্থী রাজনৈতিক দল ভেঙে গেলে বা বিভক্ত হলে আমরা আনন্দিত হইনা, বরং দুঃখিত হই। কষ্ট পাই! চলমান রাজনৈতিক প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করে আমাদেরকে বাংলাদেশের বামপন্থী-কমিউনিস্টদের মধ্যে আদর্শগত ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। আমরা যেভাবেই থাকি, শ্রমজীবী মানুষের পক্ষে শ্রেণি সংগ্রাম গড়ে তোলার জন্য অন্ততপক্ষে গণসংগঠনগুলোর মধ্যে হলেও রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তুলতে চাই।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য ড. সুশান্ত দাস, মাহমুদুল হাসান মানিক, নুর আহমদ বকুল, লুৎফুল্লাহ মুস্তফা। সমাবেশে পলিটব্যুরোর অন্য সদস্যরাও এসময় উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশ সঞ্চালনা করেন ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য কামরূল আহসান। অনুষ্ঠানের শুরুতে গণসঙ্গীত পরিবেশন করেন গণশিল্পী সংস্থা ও গণ সাংস্কৃতিক মৈত্রী’র শিল্পীরা।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

গোদাগাড়ীতে ১৫০ গ্রাম হিরোইনসহ একজন গ্রেফতার

৫০ বছর পেরিয়ে শতাব্দীর অভিযাত্রায় বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি

আপডেট সময় ১২:২০:৪৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ মে ২০২৩
 বামপন্থীদের মধ্যে ঐক্য গড়ার প্রত্যয়

 

নিউজ ডেস্ক :  বিভিন্ন লড়াই-সংগ্রাম, অর্জন ও ত্যাগের মধ্যে দিয়ে প্রতিষ্ঠার গৌরবোজ্জ্বল ৫০ বছর পূর্ণ করেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি সদা অবিচল দেশের বৃহত্তর বামপন্থী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে শতাব্দীর অভিযাত্রার প্রাক্কালে দেশের সব বামপন্থী-কমিউনিস্টদের মধ্যে ‘আদর্শগত’ ঐক্যের ডাক দিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা।
বুধবার (১৭ মে) সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিটিউশন মিলনায়তনে ওয়ার্কার্স পার্টির ৫০ বছর পূর্তিতে বছরব্যাপী কর্মসূচির সমাপনী সমাবেশ থেকে তারা এ ঐক্যের ডাক দেন। সারাদেশ থেকে আগত ওয়ার্কার্স পার্টিসহ বন্ধু সংগঠনের নেতাকর্মীরা এই সমাবেশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন। ‘নির্বাচন বিদেশিদের নির্দেশে হবে না’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, নির্বাচন এলেই দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র শুরু হয়। বিদেশি বন্ধুরা অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায়। তারা নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরাও অংশগ্রহণমূলক এবং অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। তবে নির্বাচন বানচালের কোনো ষড়যন্ত্র হলে তা আমরা প্রতিহত করব। নির্বাচন বিদেশিদের নির্দেশে হবে না, নির্বাচনকে উৎসব হিসেবে নেওয়া দেশের মানুষ নিজেরাই সুষ্ঠু নির্বাচন করবে।’

সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য দেন ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। তিনি বলেন, ‘ওয়ার্কার্স পার্টি সবসময় বাস্তবতা বিবেচনা করে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। আমরা যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে গেছিলাম, তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। দেশের সম্পদ মুষ্টিমেয় ধনিক শ্রেণির হাতে চলে যাচ্ছে। সমস্ত ক্ষমতা মুষ্টিমেয় ধনী ও আমলা গোষ্ঠীর হাতে কেন্দ্রীভূত। এসব মুক্তিযুদ্ধের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার ব্যর্থতা। জামায়াত-বিএনপির হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে আমরা ১৪ দলীয় জোট গঠন করেছিলাম। সে লক্ষ্য অর্জন হয়ে গেলেও জোটের প্রাসঙ্গিকতা এখনো বিদ্যমান। কারণ, এখনো নির্বাচনসহ অন্যান্য অনেক ইস্যুতে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে; যা আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ করতে হবে।’

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে রাকসুর সাবেক এই ভিপি ও অভিজ্ঞ পার্লামেন্টেরিয়ান বলেন, ‘আপনারা নিজ জেলায়-জেলায় ফিরে গিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করুন। দলকে আরও শক্তিশালী করতে আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। মনে রাখবেন, আমরা কখনোই মানুষের স্বার্থবিরোধী কোন কর্মকাণ্ড করিনি। সুতরাং, আগামীতে আমরাই মানুষের সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকবো। আমরা রাজনৈতিক ইস্যুতেই শুধুমাত্র লড়াই করি তা নয়, কৃষক-শ্রমিক নিয়ে, নদী নিয়ে, পানি নিয়ে, আদিবাসীদের নিয়েও আমরা লড়াই করি। তাই আসুন, আমরা সকলেই মেহনতি মানুষের পক্ষে ওয়ার্কার্স পার্টির চলমান রাজনৈতিক কর্মসূচি সফলে নিজেদের আত্মনিয়োগ করি।’

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন  ‘দেশের কোন বামপন্থী রাজনৈতিক দল ভেঙে গেলে বা বিভক্ত হলে আমরা আনন্দিত হইনা, বরং দুঃখিত হই। কষ্ট পাই! চলমান রাজনৈতিক প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করে আমাদেরকে বাংলাদেশের বামপন্থী-কমিউনিস্টদের মধ্যে আদর্শগত ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। আমরা যেভাবেই থাকি, শ্রমজীবী মানুষের পক্ষে শ্রেণি সংগ্রাম গড়ে তোলার জন্য অন্ততপক্ষে গণসংগঠনগুলোর মধ্যে হলেও রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তুলতে চাই।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য ড. সুশান্ত দাস, মাহমুদুল হাসান মানিক, নুর আহমদ বকুল, লুৎফুল্লাহ মুস্তফা। সমাবেশে পলিটব্যুরোর অন্য সদস্যরাও এসময় উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশ সঞ্চালনা করেন ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য কামরূল আহসান। অনুষ্ঠানের শুরুতে গণসঙ্গীত পরিবেশন করেন গণশিল্পী সংস্থা ও গণ সাংস্কৃতিক মৈত্রী’র শিল্পীরা।