বামপন্থীদের মধ্যে ঐক্য গড়ার প্রত্যয়
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন। ‘নির্বাচন বিদেশিদের নির্দেশে হবে না’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, নির্বাচন এলেই দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র শুরু হয়। বিদেশি বন্ধুরা অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায়। তারা নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরাও অংশগ্রহণমূলক এবং অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। তবে নির্বাচন বানচালের কোনো ষড়যন্ত্র হলে তা আমরা প্রতিহত করব। নির্বাচন বিদেশিদের নির্দেশে হবে না, নির্বাচনকে উৎসব হিসেবে নেওয়া দেশের মানুষ নিজেরাই সুষ্ঠু নির্বাচন করবে।’
সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য দেন ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। তিনি বলেন, ‘ওয়ার্কার্স পার্টি সবসময় বাস্তবতা বিবেচনা করে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। আমরা যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে গেছিলাম, তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। দেশের সম্পদ মুষ্টিমেয় ধনিক শ্রেণির হাতে চলে যাচ্ছে। সমস্ত ক্ষমতা মুষ্টিমেয় ধনী ও আমলা গোষ্ঠীর হাতে কেন্দ্রীভূত। এসব মুক্তিযুদ্ধের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার ব্যর্থতা। জামায়াত-বিএনপির হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে আমরা ১৪ দলীয় জোট গঠন করেছিলাম। সে লক্ষ্য অর্জন হয়ে গেলেও জোটের প্রাসঙ্গিকতা এখনো বিদ্যমান। কারণ, এখনো নির্বাচনসহ অন্যান্য অনেক ইস্যুতে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে; যা আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ করতে হবে।’

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে রাকসুর সাবেক এই ভিপি ও অভিজ্ঞ পার্লামেন্টেরিয়ান বলেন, ‘আপনারা নিজ জেলায়-জেলায় ফিরে গিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করুন। দলকে আরও শক্তিশালী করতে আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। মনে রাখবেন, আমরা কখনোই মানুষের স্বার্থবিরোধী কোন কর্মকাণ্ড করিনি। সুতরাং, আগামীতে আমরাই মানুষের সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকবো। আমরা রাজনৈতিক ইস্যুতেই শুধুমাত্র লড়াই করি তা নয়, কৃষক-শ্রমিক নিয়ে, নদী নিয়ে, পানি নিয়ে, আদিবাসীদের নিয়েও আমরা লড়াই করি। তাই আসুন, আমরা সকলেই মেহনতি মানুষের পক্ষে ওয়ার্কার্স পার্টির চলমান রাজনৈতিক কর্মসূচি সফলে নিজেদের আত্মনিয়োগ করি।’
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন ‘দেশের কোন বামপন্থী রাজনৈতিক দল ভেঙে গেলে বা বিভক্ত হলে আমরা আনন্দিত হইনা, বরং দুঃখিত হই। কষ্ট পাই! চলমান রাজনৈতিক প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করে আমাদেরকে বাংলাদেশের বামপন্থী-কমিউনিস্টদের মধ্যে আদর্শগত ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। আমরা যেভাবেই থাকি, শ্রমজীবী মানুষের পক্ষে শ্রেণি সংগ্রাম গড়ে তোলার জন্য অন্ততপক্ষে গণসংগঠনগুলোর মধ্যে হলেও রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তুলতে চাই।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য ড. সুশান্ত দাস, মাহমুদুল হাসান মানিক, নুর আহমদ বকুল, লুৎফুল্লাহ মুস্তফা। সমাবেশে পলিটব্যুরোর অন্য সদস্যরাও এসময় উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশ সঞ্চালনা করেন ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য কামরূল আহসান। অনুষ্ঠানের শুরুতে গণসঙ্গীত পরিবেশন করেন গণশিল্পী সংস্থা ও গণ সাংস্কৃতিক মৈত্রী’র শিল্পীরা।