বিনোদন ডেস্ক: কাজী শারমিন নাহিদ নূপুর (জন্ম ১৭ ডিসেম্বর ১৯৭৯) চলচ্চিত্রে শাবনূর হিসাবেই পরিচিত বাংলাদেশী এই অভিনেত্রী। তিনি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের অন্যতম সফল অভিনেত্রী।
নব্বইয়ের দাপুটে নায়িকা শাবনূর অস্ট্রেলিয়াতেই বসবাস করছেন। এর মধ্যে গেল ক’বছর তার দেশে আসার কথা থাকলেও, শেষ পর্যন্ত সেটি আর হয়ে উঠেনি। ঢাকাই সিনেমার সাড়া জাগানো এই নায়িকার জন্মদিন আজ রবিবার। ৪৪ পেরিয়ে ৪৫ পা রাখলেন তিনি। আর এর মধ্যেই জানা গেল, অনেকটা গোপনেই দেশে ফিরেছেন শাবনূর।
তিনি জানান, পরিবার ও কাছের মানুষেরা ছাড়া ঢাকায় আসার খবরটা আপাতত কাউকে জানাতে চাননি। বছর তিনেক পর দেশে ফেরাতে জমে আছে অনেক কাজ। নিরিবিলি সেসব সেরেও নিচ্ছেন। শাবনূরের কথায়, ‘অনেক দিন দেশে না থাকায় নানান কাজ জমে আছে। হাবিজাবি অনেক কাজ, অনেক। ওসব করছি। তাই চুপচাপ আছি। কাউকে জানাইনি।
জানা গেছে, নতুন সিনেমার কথাবার্তাও চলছে। সিনেমার গল্প শুনছেন। চলছে রিহার্সালও। সিনেমাটি পরিচালনা করবেন চয়নিকা চৌধুরী। আর এতে শাবনূরের বিপরীতে থাকবেন মাহফুজ আহমেদ। আগামী বছরের ঈদে পর্দায় ফিরবেন ঢাকাই সিনেমার দাপুটে এই অভিনেত্রী। তবে এর মধ্যে শারীরিকভাবে নিজেকেও পুরোপুরি ফিট করতে চান শাবনূর। নায়িকার ভাষ্য, ‘আমরা নিজেরা গল্প নিয়ে আলাপ-আলোচনা করছি ঠিক আছে। গল্প, চরিত্র আমাদের পছন্দ, তা-ও ঠিক আছে। কিন্তু পুরোপুরি ফিট না হলে তো ফিরব না। কোনোভাবেই না। ফেরার খবরটা যেন ফেরার মতোই হয়, সেদিকটায় খেয়াল রাখতে হবে।’
এদিকে, জন্মদিনে ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষীদের শুভেচ্ছায় ভাসছেন শাবনূর। বিশেষ কোনো আয়োজন না থাকলেও, ঘরোয়া আয়োজনে দিনটি কাটাবেন তিনি। শাবনূর বলেন, ‘সবাই আমাকে এখনো এতটা ভালোবাসে, এই দিনে সেটা আবার নতুন করে উপলব্ধি হয়। রাত ১২টা বাজতে না বাজতেই ফোনে এসএমএস আসে, অনেকে কথাও বলে। ফেসবুকে কত সুন্দর সুন্দর কথা লেখে। সহকর্মীদের ভালোবাসায়ও আমি মুগ্ধ। কেউই আমাকে বুঝতে দেয় না, অনেক দিন কাজে নেই। দেশের মানুষের মনে শাবনূর হয়ে জায়গা করতে পেরেছি। সবাই আজও নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসে, এর চেয়ে বড় অর্জন আর কীই-বা হতে পারে।
ফেলে আসা জীবনের দিকে তাকালে দেখতে পাই, আমি যা চেয়েছি, তার চেয়ে অনেক বেশি পেয়েছি। মানুষের এই ভালোবাসা আমাকে আপ্লুত করে।
তিনি ২০০৫ সালে মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত দুই নয়নের আলো ছবিতে অভিনয় করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। তিনি রেকর্ড সংখ্যক ১০ বার তারকা জরিপে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনেত্রী বিভাগে মেরিল-প্রথম আলো জাতীয় পুরস্কার লাভ করেছেন। শাবনূরের চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে চাঁদনী রাতে (১৯৯৩) চলচ্চিত্র দিয়ে।
এই চলচ্চিত্রটি ব্যবসায়িকভাবে ব্যর্থ হলেও পরে সালমান শাহের সাথে জুটি বেধে তিনি সফলতা লাভ করেন। সালমান শাহের সাথে তার অভিনীত স্বপ্নের ঠিকানা (১৯৯৫) যথাক্রমে বাংলাদেশের দ্বিতীয় শীর্ষ ব্যবসা সফল চলচ্চিত্র। ১৯৯৯ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত তিনি টানা পাঁচবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার লাভ করেন, তন্মধ্যে প্রথম তিন বছর কোন নির্দিষ্ট চলচ্চিত্রের জন্য পুরস্কার প্রদান করা হয়নি এবং পরের দুই বছর যথাক্রমে শ্বশুরবাড়ী জিন্দাবাদ (২০০১) ও স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ (২০০২) চলচ্চিত্রের জন্য। তার পরের পাঁচটি মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার আসে ফুলের মত বউ (২০০৪), মোল্লা বাড়ীর বউ (২০০৫), আমার প্রাণের স্বামী (২০০৭), ১ টাকার বউ (২০০৮), ও বলবো কথা বাসর ঘরে (২০০৯) ।