বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে গত ৫জুন অনুষ্ঠিত বাঘা উপজেলায় নির্বাচন পরবর্তী হামলা ভাংচুর ও লুটপাট,মারধরের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১৫ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টায় উপজেলা আ’লীগের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করা হয়। লিখিত বক্তব্য পাঠকালে উপজেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল বলেন,বাঘার একটি স্বার্থনেস্বী মহল গত সংসদ নির্বাচনে আ’লীগ দলীয় বিজয়ী প্রার্থী, শাহরিয়ার আলমের এলাকার উন্নয়ন অর্জন, সাধারন জনগোষ্টির শান্তি-সম্প্রতি বিনষ্ট করার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে শান্তি বিঘেœর কার্যকলাপে লিপ্ত থেকে সংসদ নির্বাচনের আগে,নির্বাচন চলাকালিন ও উপজেলা নির্বাচন পরবর্তী সময়ে জামায়াত,বিএনপি ও স্বাধীনতা বিরোধী মৌলবাদি চক্রের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী রোকনুজ্জামানের কর্মী সমর্থক ও সাধারন ভোটারদের মারপিট,ভয়ভীতি প্রদর্শন সহ বাড়ি ঘরে হামলা-ভাঙচুর অব্যাহত রেখেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাঘা উপজেলা পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান এ্যাড. লায়েব উদ্দিন লাভলু.বাঘা পৌর মেয়র আক্কাছ আলী,পাকুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলাম মেরাজ, বাঘা উপজেলা পরিষদের নব নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান মোকাদ্দেস আলীর মদদে, তাদের সন্ত্রাসী বাহিনীর তান্ডবে শারীরিকভাবে লাঞ্জিত, বাড়িতে হামলা, ভাংচুর, লুটপাটের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ হন-বাউসা ইউনিয়নের- রাকিবুল ইসলাম শিমুল, মোজাফফর আলী, শাহাদত হোসেন ভোলা, মহসিন মেম্বর, নাসির উদ্দিন, জাহেদুল ইসলাম, মোহাম্মদ ডাবলু, সেন্টু আলী, আশিক আলী, বাবলু মন্ডল, মিজানুর রমহমান, আবদুর রাজ্জাক, জালাল উদ্দিন, তামিম ইকবাল,ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম, বাঘা পৌর সভার-ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ সনেট, চকরাজাপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান, মনিগ্রাম ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা কিরণ মাহমুদ,আ’লীগ নেতা মামুন হোসেন।
অভিযোগ করা হয়,উপজেলা নির্বাচনে দিনব্যাপি চলমান ভোট গ্রহন সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন হলেও ভোট গননার পর মূহুর্তে অসাধু উপায়ে ছলছাতুরির আশ্রয় নিয়ে আনারস প্রতীকের বিজয়কে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করা হয়েছে। সম্প্রতি ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ সনেটকে শারিরিক নির্যাতন,বাড়ি-ঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে মামলা হলেও আসামী গ্রেপ্তার হয়নি। শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার নিমিত্তে আসামী গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে বলা হয়,আইনের আওতায় না আসলে আমরা রাজপথে সোচ্চার হব বলে হুসিয়ারি দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম মন্টু, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াহেদ সাদিক কবির, মঞ্জুরুল ইসলাম মনি, বাঘা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল কুদ্দুস সরকার, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহিনুর রহমান পিন্টু, কাউন্সিলর মোমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
বিজয়ী চেয়ারম্যান এ্যাড. লায়েব উদ্দিন লাভলু বলেন, আমাকে পরাস্ত করতে নিজের তৈরি নানা কৌশলে ব্যর্থ হয়ে এখন মিথ্যাচার করছে। আমি শান্তিকামি মানুষ হিসেবে সহিংস রাজনীতিতে বিশ্বাসী নই। কারা উত্তাপ ছড়িয়েছে কিংবা ছড়াচ্ছে,সেটিও দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের খতিয়ে দেখার বিষয়। আনিত অভিযোগ সত্য নয় দাবি করে বলেন,কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সুষ্ট ও সুন্দরভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্তরা সার্বক্ষনিক নিষ্টা ও সততার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। পরাজিত হয়ে অভিযোগ তোলা মামুলি ব্যাপার।
জানা গেছে, গত ৫ জুন অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক অ্যাড. লায়েব উদ্দিন লাভলু ১০৬ ভোট বেশি পেযে চেযারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৩২ হাজার ৪০৫ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রোকনুজ্জামান রিন্টু আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৩২ হাজার ২৯৯ ভোট। উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৬৫ হাজার ৬৬৩। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৮৩ হাজার ৭ ও নারী ভোটার ৮২ হাজার ৬৫৬ জন।
উপজেলা নির্বাচনে সহকারি রিটানিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার তরিকুল ইসলাম বলেন, পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী রোকনুজ্জামান ব্যালট পুণ:গণনার জন্য জেলা প্রশাসক ও রিটানির্ং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে আমার কাছে কোন নির্দেশনা আসে নাই। প্রদত্ত ভোটের ফলাফল বিষয়ে বলেন, কোন ভোটারের পছন্দের প্রার্থী না থাকলে ভোট না দিয়ে, সীল না মেরে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার চোখকে ফাঁকি দিয়ে চলে আসতে পারে। সেগুলো হিসাব করে ফলাফলে প্রদত্ত ভোটার উপস্থিতি দেখনো হয়েছে। যার কারণে চেযারম্যান,ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর ফলাফলে কমবেশি হয়েছে।