আব্দুল্লাহ হেল কাফি, সিরাজগঞ্জ : জনসাধারণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে চলমান রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে চিকিৎসা খাতে নার্সিং সেবায় অনিবন্ধিত, ভুয়া ব্যক্তির মাধ্যমে বেসরকারি হাসপাতাল/ক্লিনিকে নার্সিং সেবা অনতিবিলম্বে আইন অনুযায়ী বন্ধ করতে হবে। অনিবন্ধিত, ভুয়া ব্যক্তিদের বেসরকারি হাসপাতাল/ক্লিনিকে নার্সিং সেবায় নিয়োজিতদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে অপসারণ করতে হবে।
এমন সব দাবি নিয়ে সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিস ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন সচেতন নার্স ও মিডওয়াইফ সমাজ। মঙ্গলবার দুপুর ১ টার সময় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে গণস্বাক্ষর ও স্মরকলিপি প্রদান করেন সমন্বয়করা।
এসময় শিক্ষার্থীর ন্যায্য দাবির বিষয়ে আলোচনা করেন তারা৷ স্মরকলিপিতে উল্লেখিত ১১ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।
১১ দফা দাবি সমূহ
১. ভুয়া নার্স ও মিডওয়াইফারি নির্মূলে বাংলাদেশ নার্সিং এন্ড মিডওয়াইফারী কাউন্সিল এবং স্বাস্থ্য অদিদপ্তরের সমন্বয়ে প্রতি জেলায় সিভিল সার্জন, তরুণ নার্স /শিক্ষার্থীদের নিয়ে সার্বজনীন মনিটরিং সেল গঠন করে বছরে অন্ততঃ দুই বার ঝটিকা অভিযানের মাধ্যমে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে।
২. ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সাইন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি ও ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি ডিগ্রি সমমান প্রদান করতে হবে।
৩. নার্সিং ও মিডওয়াইফারির উপর প্রফেশনাল বিসিএস চালু করতে হবে এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী পদোন্নতি নিশ্চিত করতে হবে।
৪. বিএনএমসি ও ডিজিএনএম এর মহাপরিচালক পদে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কর্মকর্তা রাখতে হবে এবং এই সংস্থাগুলো নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কর্মকর্তা দ্বারা পরিচালিত করতে হবে।
৫. বেসরকারি নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীদের ইন্টার্ন ভাতা প্রদান করতে হবে এবং ইন্টার্ন ফি বাতিল করতে হবে।
৫. স্বাধীন ও স্বায়ত্বশাসিত নার্সিং বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকরণ এবং অভিন্ন প্রশ্নপত্রে যথাসময়ে কোর্স সম্পন্ন করতে হবে।
৭. বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সরকার কর্তৃক নজরদারি রাখতে হবে এবং মানহীন প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করতে হবে। পর্যাপ্ত মানসম্মত শিক্ষক নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের ট্রেনিং সেন্টার চালু করতে হবে।
৮. নার্সিং ভর্তি এবং চাকরি ক্ষেত্রে ছেলে-মেয়ে ভর্তি বৈষম্য দূর করতে হবে।
৯. ভিজিলেন্স ফি, এক্সট্রা চার্জ বা এক্সটারনাল পরীক্ষকের খরচ বিশেষ করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ অধিভুক্ত সকল কলেজের এক্সট্রা ফি বাতিল করতে হবে এবং সমাপ্তি পরীক্ষার ফি সরকারি এবং বেসরকারি সমান রাখতে হবে।
১০. অন্যান্য সেক্টরের ন্যায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও সঠিক কর্ম ঘন্টা এবং বেতন কাঠামো প্রণয়ন করতে হবে এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মিডওয়াইফারিদের কর্মসংস্থান ও নিয়োগ সুনিশ্চিত করতে হবে।
১১. লাইসেন্স পরীক্ষার অতিরিক্ত ফি বাতিল করতে হবে এবং লাইসেন্স নবায়ন (রিনিউ) করার ক্ষেত্রে কোন ফি যাতে না নেওয়া হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
এর আগে প্রায় সরকারি-বেসরকারি ১০ টি কলেজের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে সিভিল সার্জন ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন৷ স্মারকলিপির বিষয়ে সমন্বয়ক আহসাব হাবিব সোহাগ বলেন, আমরা সিভিল সার্জন ও জেলা প্রশাসক বারাবর ২৪ ঘন্টা সময় বেঁধে দিয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়েছি। তারা আমদের আশ্বস্ত করেছেন৷
এসময় উপস্থিত ছিলেন সমন্বক পার্থ প্রীতম, রাদিতা, জহুরুল হক রবিন, ইয়াকুব আলী, সুবর্ণা, অনিক, তারেক, বেল্লাল সরকার, আল-রিয়াদ, নাজমুল হক, সুজন৷ সহ-সমন্বক ছিলেন শাকিল আহমেদ ও সালামত উল্লাহ। সিভির সার্জন ডা. রাম পদ রায়ের মোবাইল নম্বরে কল দেয়া হলে নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে একটি ভিডিওতে তিনি শিক্ষার্থীদের দাবি নিয়ে বলেন, এখানে অনেকগুলো দাবি আছে তার মধ্যে জাতীয় দাবি রয়েছে। আমার দ্বারা যেগুলো সম্ভব আমি দেখবো। জাতীয় দাবিগুলো তাদের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করবো।