১৯৬০-এর দশকে মঞ্চে পারফর্ম করার মাধ্যমে অভিনয় জীবন শুরু করেন অমল বোস। মঞ্চ, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনে ছিল তাঁর উজ্জ্বল পদচারণা। জনপ্রিয় অভিনেতা অমল বোসের প্রয়াণ দিবস আজ।
২০১২ সালের ২৩ জানুয়ারি, ৬৯ বছর বয়সে পরলোকগমন করেন অমল বোস। অমল বোস ১৯৪৩ সালে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ষাটের দশকের প্রথম থেকেই অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত হন। সেই সুবাদে ঢাকাতেই তিনি জীবনের সিংহভাগ সময় কাটিয়েছেন।
পেশাগত জীবনে জুট মিলস্ কর্পোরেশনের সিনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালে চাকরি জীবন থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৩ সালে থেকে ঢাকা ক্লাব থিয়েটার-এ মঞ্চ নাটকে কাজ করেছেন। নুরুল মোমেনের নাটক ‘আলো ছায়া’ তাঁর নির্দেশনায় দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। সেই সময় তিনি ‘অবসর’, ‘সপ্তরূপা’, ‘শৈবাল’ ও ‘রংধনু’ নাট্যগোষ্ঠীর সঙ্গে অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেন।
১৯৬৬ সালে ‘রাজা সন্ন্যাসী’ সিনেমাতে অভিনয় করে চলচ্চিত্রে পদার্পণ করেছিলেন তিনি। এরপর ‘তিনি নীল আকাশের নীচে’, ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’সহ বহু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। অভিনয়ের পাশাপাশি একটি চলচ্চিত্র পরিচালনাও করেন অমল বোস। অভিনয়ের পাশাপাশি সত্তরের দশকে ‘কেন এমন হয়’ নামের সিনেমাটি পরিচালনা করেন তিনি।
২০০৪ সালে মতিন রহমান পরিচালিত ‘রং নাম্বার’ এবং মুশফিকুর রহমান গুলজারের ‘কুসুম কুসুম প্রেম’ সিনেমাতে তিনি অভিনয় করেন। ১৯৬৪ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনের যাত্রা শুরুর পর থেকেই টিভি নাটকে তিনি ছিলে একজন পরিচিতি মুখ। বাংলাদেশ টেলিভিশনের সার্বজনীন দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে প্রচারিত বিশেষ নাটিকায় অসুর চরিত্রে অভিনয় করে তিনি ‘জাতীয় মহিষাসুর’ হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছিলেন।
দীর্ঘ ৩৮ বছর ঐ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমীর বিশেষ নাটিকায় কংসের চরিত্রে অভিনয়েও তিনি ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী। এছাড়াও পরিচালক ও উপস্থাপক হানিফ সংকেত পরিচালিত জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদির ‘নানা-নাতি’ পর্বে অমল বোসের নানা ও মোহাম্মদ শওকত আলী তালুকদারের নাতি চরিত্রটি বহুল আলোচিত হয়।
সেই থেকে তিনি নানা নামেই জনপ্রিয়তা লাভ করেন এবং প্রসিদ্ধ হন। অমল বোস তাঁর দীর্ঘ অভিনয় জীবনে নব্বইয়ের দশকে চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘আজকের প্রতিবাদ’ সিনেমাতে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।