সোনালী রাজশাহী : হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯৩তম জন্মদিন আজ।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। বাবা আদর করে ডাকতেন রেনু। টুঙ্গীপাড়ার সেই ছোট্ট রেনু হয়ে উঠেছিলেন বাঙালি জাতির আত্মবিশ্বাস। বঙ্গমাতাকে পাশে পেয়েই বঙ্গবন্ধু পেয়েছিলেন পূর্ণতা। এক মহীয়সী নারীর প্রতিকৃতি তিনি। যোগ্য জীবন সঙ্গিনী হিসেবে লড়াই-সংগ্রামে থেকেছেন পাশে। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার ভূমিকা আজও জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে। আজ বঙ্গমাতার ৯৩তম জন্মদিন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেরণা ও আত্মবিশ্বাসের উৎস তিনি। যিনি পাশে ছিলেন বলেই দেশের কঠিন সময়ে সাহসী সিদ্ধান্ত সহজেই নিতে পারতেন শেখ মুজিব। মৃত্যু পর্যন্ত পাশে থেকে যিনি দিয়েছেন ভরসা। বঙ্গবন্ধুর দিকনির্দেশনা পৌঁছে দিতেন নেতাকর্মীদের মাঝে অনুপ্রেরণা জোগাতেন লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার জন্য। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় প্যারোলে মুক্তি নিয়ে কিছু কুচক্রী স্বাধীনতা সংগ্রামকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছিল যখন, তখন প্যারোলে মুক্তির বিপক্ষে বেগম মুজিবের দৃঢ়চেতা অবস্থান বাংলার মুক্তি সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করেছিল, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে স্বর্ণের অক্ষরে লেখা থাকবে। ভেঙে পড়তে জানতেন না এই মহীয়সী। একা হাতে সামলেছেন সংসার আর বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে দল আওয়ামী লীগ। পেছনে থেকেই মুক্তিযুদ্ধের সময় বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন। তাইতো বাঙালির ঋণ রয়েছে এই মহৎপ্রাণের প্রতি।
জন্মদিনে জাতি আজ গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব রেনুকে। বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দিবসটিতে সরকারি কর্মসূচি ছাড়াও আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছে। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক মিডিয়া বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে। বঙ্গমাতা ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট তৎকালীন গোপালগঞ্জ জেলার (তৎকালীন মহকুমা) টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাকনাম ছিল রেণু। বাবার নাম শেখ জহুরুল হক, মায়ের নাম হোসনে আরা বেগম। এক ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন ছোট। স্বামী বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ছায়ার মতো অনুসরণ করা বেগম মুজিব জীবনে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করেছেন। এজন্য অনেক কষ্ট-দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে তাকে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে তিনিও জাতির পিতার হত্যাকারীদের হাতে নির্মমভাবে শহীদ হন। এ দেশের মানুষের আন্দোলন-সংগ্রামে বেগম মুজিব যে কর্তব্যনিষ্ঠা, দেশপ্রেম, দূরদর্শী চিন্তা, বুদ্ধিমত্তা ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তার ফলে জাতির পিতার পাশাপাশি তিনি আজ বঙ্গমাতার আসনে অধিষ্ঠিত। এ দেশের রাজনীতিতে তার অনন্য সাধারণ ভূমিকার জন্য চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবেন