নিউজ ডেস্ক: লক্ষ্মীপুরের সদর উপজেলার পালেরহাটে জমির মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে রাতের অন্ধকারে হামলা চালিয়ে বিদ্যালয়ের ১০টি সেমিপাকা ও দুটি টিনশেড শ্রেণিকক্ষ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) গভীর রাত ও শুক্রবার ভোর রাতে সদর উপজেলার পালেরহাট মডেল একাডেমিতে এ ভাঙচুর চালানো হয়।
জমির মালিকানা দাবি করে তোফায়েল আহমেদ ও আবু তাহেররা দলবল নিয়ে এ ঘটনা ঘটায়। এসময় দুটি ল্যাফটপ ও শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতনের ১ লাখ টাকা নিয়ে যায় হামলাকারীরা। ভাঙচুর ও লুটপাটে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রতিষ্ঠান প্রধান মোরশেদ কামাল দাবি করেছেন। বিদ্যালয়ের প্রধান মোরশেদ কামাল ও তার বড় ভাই সাইফুল ইসলাম জানায়, তাদের মা ফাতেমা বেগম এই জমির মালিক।
২০১৪ সালে এ জমিতে বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়। কিন্তু তাদের মায়ের চাচাতো ভাই তোফায়েল আহমেদ, আবু তাহের ও খোরশেদরা জমির মালিকানা দাবি করে আসছে। এনিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে একাধিকবার বৈঠক হলেও তোফায়েলরা জমির কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। সবশেষ ১৩ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়েও বৈঠক হয়। সেখানেও তারা কোন কাগজপত্র উপস্থাপন করতে পারেনি এদিকে তোফায়েলরা দলবল নিয়ে জোরপূর্বক জমি দখল করতে বৃহস্পতিবার রাতের অন্ধকারে বিদ্যালয়ে ভাঙচুর চালায়।
বাজারের একজন নৈশ প্রহরীর কাছ থেকে খবর পেয়ে ৯৯৯ কল দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল আসে। তাৎক্ষণিক হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ চলে গেলে শুক্রবার ভোরে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত দলবল নিয়ে ফের ভাঙচুর চালায়। এতে বাধা দিতে গেলে প্রতিষ্ঠান প্রধান মোরশেদকে মারধর করে তারা। হামলাকারীরা বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষসহ ১০ টি সেমিপাকা, দুটি টিনসেট শ্রেণিকক্ষ, একটি ডেস্কটপ কম্পিউটারসহ সকল আসভাবপত্র ভাঙচুর করে। পরে দুটি ল্যাফটপ ও শিক্ষকদের মাসিক বেতনের জন্য রাখা ১ লাখ টাকা নিয়ে যায় হামলাকারীরা।
শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত ও মেহেদী হাসান জানান, বৃহস্পতিবারও তারা ক্লাস করে গেছে। এখন তাদের স্কুলটা ভেঙে তছনছ করে ফেলেছে। তারা কোথায় ক্লাস করবে। সামনে তাদের বার্ষিক পরীক্ষা। এ অবস্থায় ক্লাস করতে না পারলে তাদের পড়ালেখার সমস্যা হবে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোরশেদ কামাল বলেন, দুইদফা হামলা চালিয়ে পুরো স্কুল ভেঙে তছনছ করে ফেলেছে । প্লে থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত আমাদের প্রায় ২৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এ শিক্ষার্থীদের পাঠদান এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই। লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনিছ উজ জামান বলেন, খবর পেয়ে রাতে ঘটনাস্থলে এসে ভাঙচুরের সত্যতা মিলে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এরপর আমরা চলে গেলে ফের স্কুলে ভাঙচুর চালানো হয়। ঘটনাস্থল এসে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। হামলাকারীদের তথ্য নেওয়া হয়েছে। থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে : সূত্র চৌকস।