নিউজ ডেস্ক: বিশিষ্ট গল্পকার-লেখক, প্রবীণ সাংবাদিক ও সাবেক তথ্য কর্মকর্তা খালেদ বেলাল মারা গেছেন। সোমবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ১০টায় নগরীর ন্যাশনাল হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যু কালে তার বয়স হয়েছিলো ৮৫ বছর।
তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খালেদ বেলালের ছেলে চট্টলা টিভির সম্পাদক সাজ্জাদ বিন খালেদ সুমন। সম্প্রতি খালেদ বেলাল গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যরা তাঁকে নগরীর ন্যাশনাল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। ১৯৩৮ সালের পহেলা জানুয়ারি চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার বাউরিয়া মৌলভী বাজারের পাশে ওলি গান্ধীর বাড়িতে জন্ম গ্রহণ করেন তিনি।
খালেদ বেলাল দৈনিক ঈশান পত্রিকার সহকারী সম্পাদক ছিলেন। এছাড়াও তিনি একাধারে সাংবাদিক, সাবেক তথ্য কর্মকর্তা ও বিশিষ্ট গল্পকার ছিলেন। তাছাড়া ` আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি' গানের রচয়িতা সাংবাদিক আব্দুল গাফফার চৌধুরীর সাথে আওয়াজ পত্রিকায় কাজ করেছেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে তার ভূমিকা ছিলো সক্রিয়। কলামিস্ট হিসেবেও কাজ করেছেন চট্টগ্রামের আঞ্চলিক দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকায়, কর্মজীবনের শুরুতে তিনি ঢাকার দৈনিক পয়গামে চাকুরী করেছেন। তারপরে ১৯৬২ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন। বিসিএস তথ্য কর্মকর্তা হিসেবে চট্টগ্রামের বিভাগীয় সংবাদপত্র পরিদর্শক, ভারপ্রাপ্ত উপপ্রধান তথ্য অফিসার, ২৪ পদাতিক ডিভিশনে প্রেস লিয়াজোঁ অফিসার ও চট্টগ্রাম তথ্য অধিদপ্তর (পিআইডি) এর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সরকারি দায়িত্ব থেকে অবসর নিয়ে আবারো যুক্ত হন সাংবাদিক পেশায়। এরপর কাজ করেন ইংরেজী দৈনিক ‘দ্য পিপলস ভিউ’ সহ আর অনেক পত্রিকায়। প্রখ্যাত এই সাংবাদিক খালেদ বেলাল রচিত উল্লেখযোগ্য প্রকাশনা গুলোর মধ্যে অন্যতম হল ক্ষমা চাই শরীফার মা, নৈ:শব্দে তোমার প্রতিধ্বনি, অন্য এক বিশাখা চৌধুরী, স্মৃতির লাল মর্গে, স্পর্শে অঙ্গার মন, মরাগাঙে ডুবসাঁতার, আমৃত্যু পূর্ণিমা জামান, কৃষ্ণপক্ষের জোছনা, শুধু তোমার জন্য এবং জীবনালেখ্য: জীবনানন্দ মহাথেরো।
এছাড়াও খালেদ বেলাল সম্পাদনা করেছেন ফ্যালকনরি ইন দ্যা হিলস, অন্ধকারে সূর্যোদয়, হাদিস: প্রতিদিন প্রতিমুহূর্ত, হেরার দ্যুতি, বসন্তে বৈশাখী ঝড়, মানবপ্রেমিক জোশেফ রেসিন্সকি, হৃৎপিন্ডের ছন্দবৈষম্য এবং হৃদরোগ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক ভাবনা, প্রতিরোধ ও প্রতিবিধান। মৃত্যুকালে খালেদ বেলাল দুই ছেলে, দুই মেয়ে, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।