শাহ্ সোহানুর রহমানঃ রাজশাহীতে ঢাকা মেট্রো-ড ১৪-৪৮৫৩ নম্বরের একটি ট্রাকের বেপরোয়া গতিতে ৪ জন সিএনজি যাত্রী নিহত হয়েছেন। শনিবার (২৫ নভেম্বর) দুপুর ২টায় বেলপুকুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
তবে ঘটনাস্থলে উৎসুক জনতার ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। এসময় তৈরি হয় যানজট। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, দয়িত্ব পালনে বেশ হিমশিম খাচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের দুটি টিম। নাটোর-থ ১১-০০৪৫ নম্বরের সিএনজিটি চাপা পড়ে রয়েছে ট্রাকের নিচে।
মোটরসাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে দৃশ্য দেখছিলেন কেউ কেউ। স্থানীয়রা টিসিবির পণ্যগুলো ওপরে তোলার কাজে ফায়ার সার্ভিসকে সহযোগিতা করছিলেন। ফায়ার সার্ভিসের রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মো. আকতার হামিদ বলেন, আমাদের দুটি ইউনিট কাজ করছে। ট্রাক তোলার পর বুঝা যাবে নিতে কেউ আছে কিনা। কতক্ষণ লাগবে, বলা যাচ্ছে না। আইনাল হক নামে ৬০ বছরের এক বৃদ্ধ খুড়িয়ে খুড়িয়ে আসেন ঘটনাস্থলে। ঘটনাস্থলে আসার কারণ জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমার ছেলেগুলা বাইরে চলাফেরা করে। তারা খামখুট্টা (হতাহত) হয়েছে কিনা, তাই দেখতে এসেছি বাবা। ৬০ বছর বয়সী আব্দুর রাজ্জাক নামে আরেক বৃদ্ধ ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি বলেন, আগ্রহ থেকে দেখছি। কী হয়েছে না হয়েছে এমনি আগ্রহ তাই, দেখতে এসেছি।
এদিকে, রামেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাস্থলে ২ নারীসহ জন ৫ জন নিহত হন। এদের মধ্যে ৪ জন একই পরিবারের। সিএনজিতে করে যাচ্ছিলেন তারা। আহত হয়েছেন অন্তত ৭ জন। নিহতরা হলেন- নাটোরের গুরুদাসপুর এলাকার হাসান আলীর স্ত্রী পারভিন বেগম (৩৫), একই উপজেলার আবু সাইদের মেয়ে এইচএসসির শিক্ষার্থী শারমিন (১৭), কান্তপুর এলাকার ইনসাব আলীর ছেলে আইয়ুব আলী লাবু (৩৫), রাজশাহীর কাটাখালি সিটি গেট এলাকার রিপনের ছেলে হৃদয় (১৮) ও নাটোরের গুরুদাশপুরের তোফাজ্জলের ছেলে সিএনজি চালক মোকলেস।
রফিকুল ইসলাম নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী এ প্রতিবেদককে জানান, বাইপাস হয়ে পাবনা যাচ্ছিল একটি ট্রাক। ট্রাকে টিসিবির পণ্য ছিল। বিপরীত দিক থেকে একটি সিএনজি রাজশাহী শহরে যাচ্ছিল। এতে চালকসহ ৬ জন ছিলেন। এসময় বেপরোয়া ট্রাকটি দোকানে ঢুকে গিয়ে দোকানি ও সিএনজিসহ পাশের গর্তে ঢুকে যায়। তিনি বলেন, ট্রাকটি উচ্চ গতিতে চলছিল। দোকানদারের নাম দেলোয়ার। তিনি মারা যায়নি। তবে আহত হয়েছেন। টিসিবির পণ্যবাহী ট্রাকে তপন কুমার সাহা ছিলেন। তিনি টিসিবির ডিলার।
তপন কুমার এ প্রতিবেদককে তিনি বলেন, টিসিবির মাল নিয়ে পাবনার সুজানগর যাচ্ছিলাম আমরা। কীভাবে কী হলো, কিছুই বুঝতে পারলাম না। পরে দেখি আমরা গর্তের ভেতর। পরে উঠে আসি এবং হেলপার চলে গেছে। চালক আহত হয়েছেন। আমি ভাগ্যক্রমে বেঁচেছি। আরএমপির বেলপুকুর থানার ওসি মামুনুরু রশীদ মামুন বলেন বলেন, আমরা স্পটে আছি। উদ্ধার৷ কাজ চলছে। লোকজন কথা শুনতে চাচ্ছে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমরা চেষ্টা করছি।